জামায়াতে ইসলামীকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কিত অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আবু হেনা রাজ্জাকী বলেছেন, দেশের এই প্রেক্ষাপটে যদি গণভোট আয়োজন করা হয়, তবে জামায়াতকে বাদ দিয়েই তা করা উচিত।
সম্প্রতি বেসরকারি এক টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু হেনা মনে করেন, গণভোটের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জাতীয় ঐক্য ও আস্থা পুনর্গঠন, বিভাজন নয়। “জামায়াতকে বাদ দিয়েই যদি গণভোট আয়োজন করা হয়, তবেই তা সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে বারবার ব্যবহার করা হয়েছে। কখনো আন্দোলনের সময়, কখনো ক্ষমতার অংশীদার হিসেবে। কিন্তু এভাবে তাদের রাজনৈতিক বৈধতা তৈরি করা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
আলোচনায় তিনি আরও বলেন, একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা যেমন তার চাকরির নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য, তেমনি রাজনীতিকদেরও নৈতিক সীমারেখা থাকা প্রয়োজন। স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ দেওয়া আর একইসঙ্গে তাদেরকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া—এই দ্বৈত আচরণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি জামায়াতকে প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে ধরা হয়, তাহলে তাদেরকে কখনোই রাজনৈতিক জোট বা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার নৈতিক অধিকার কোনো দলের নেই।
জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুটি পরীক্ষিত দল বহুবার প্রশাসনকে ব্যবহার করে নিজেদের ভিত্তি গড়ে তুলেছে। প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া যদি তারা জনগণের ভিত্তি তৈরি করতে পারতো, তাহলে আজ তাদের এত অভিযোগ থাকতো না। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার ও ভাগাভাগি নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। যে দলই ক্ষমতায় যাক, তারা প্রশাসনকে নিজেদের পক্ষে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে; এতে গণতন্ত্র দুর্বল হয়।
গণভোট প্রসঙ্গে আবু হেনা বলেন, গণভোট হবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। কিন্তু যদি সেখানে এমন কোনো দলকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়, যারা অতীতে স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল বা আজও সেই অবস্থান পরিবর্তন করেনি,তাহলে সেই গণভোটের নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর