ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সে কারণে এর সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলও গণতান্ত্রিক মানসিকতা ধারণ করে এবং সরাসরি কোনো মব কালচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে না। তিনি বলেন, যদি আমরা তা করতে যেতাম, তবে অনেক ক্যাম্পাসেই কেউ টিকে থাকতে পারত না।
তিনি আরও বলেন, তাদের মতো করে যদি আমরা নিজের হাতে মব কালচার প্রতিহত করতাম, তাহলে একটি ক্যাম্পাসও স্থিতিশীল থাকত না। এ কারণেই আমরা ধৈর্য ও সহনশীলতার পথ বেছে নিয়েছি।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে দীপু চন্দ্র দাস ও শিশু আয়েশা হত্যাকাণ্ডসহ দেশব্যাপী মব সন্ত্রাসের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় রাকিব অভিযোগ করেন, গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্রসমাজের কাছে আমাদের অপদস্থ করা হয়েছে মিথ্যা প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে। এর মাধ্যমে সব ছাত্র সংসদে তাদেরকে বায়াসড করা হয়েছে। এখনো সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠী ও বিদেশে অবস্থানরত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ময়মনসিংহের ভালুকায় কোনো অপরাধ বা ধর্ম অবমাননার প্রমাণ ছাড়াই এক পোশাক শ্রমিককে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। একইভাবে সাত বছরের শিশু আয়েশা আক্তারকে দরজা বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, যা চরম নিষ্ঠুরতার উদাহরণ। এসব ঘটনা ৫ আগস্ট পরবর্তী বাস্তবতায় কেউ কল্পনা করেনি। এসব ঘটনার আমরা নিন্দা জানাই।
রাকিব অভিযোগ করেন, এসব হত্যাকাণ্ডে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর কোনো প্রতিবাদ নেই, বরং তারা ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা অপবাদ ও প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে বিএনপিকে দায়ী করছে। ওসমান হাদির ওপর হামলার পরপরই বিএনপি ও এর শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এ ধরনের প্রোপাগান্ডা যারা চালান তাদেরকে প্রতিরোধ ও প্রতিরোধ করতে ছাত্রদল সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে বলে জানান তিনি।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ধর্মের নামে কে ভালো মুসলিম আর কে নয়– এভাবে বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। তিনি বিপু চন্দ্র দাস ও আয়েশা হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ছাত্রদল ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চেয়েছিলাম যেখানে সবাই সবার ধর্ম পালন করে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু একদল মব সৃষ্টিকারী হায়েনা এ দেশকে অস্থিতিশীল করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
এর আগে বিক্ষোভ মিছিল উপলক্ষ্যে সংগঠনের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে জড়ো হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে ছাত্রদল নেতারা বক্তব্য দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর