আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন এখনো ঘোষণা হয়নি। এ আসনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এলাকার ভাগ্নে হিসেবে পরিচিত এনডিএম-এর মহাসচিব মোমিনুল আমিন নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগের পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মহাপুলিশ পরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করার তিনটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। এতেই শুরু হয়েছে নিন্দার ঝড়।
রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিখন লিখেছেন, "ফ্যাসিস্টের দোসর কোনোভাবেই বিএনপির সমর্থনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে না। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।"
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য উজ্জ্বল মণ্ডল লিখেছেন, "এই হলো গোপালগঞ্জের মোমিনুল আমিন, রাজবাড়ী এসে গোতাগুতি করছে। এ অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী শক্তির মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। কোনো স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদীর দোসরকে মানি না।"
আপন শিকদার লিখেছেন, "ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতিত স্বৈরাচারের পালিত কোনো ল্যাসপেন্সার (শিষ্য) কোনোভাবেই জাতীয়তাবাদের শরিক হতে পারে না। সংসদ সদস্য হওয়া এটা কি মামাবাড়ির আবদার?"
রেইন রবিন লিখেছেন, "পতিত স্বৈরাচারের পালিত কোনো ল্যাসপেন্সার কোনোভাবেই জাতীয়তাবাদের শরিক হতে পারে না।"
শাহিদুল ইসলাম সায়েদ লিখেছেন, "এই হলো রোহিঙ্গার চরিত্র, এই হলো গোপালগঞ্জের মোমিনুল আমিন, রাজবাড়ী এসে গোতাগুতি করছে। এ অঞ্চলের জাতীয়তাবাদী শক্তির মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। রাজবাড়ী-২-এর বিএনপির সৈনিক মানবে না কোনো স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদীর দোসরকে, মানি না।"
কাজী মাশুকুর রহমান লিখেছেন, "কোনো আওয়ামী লীগের দোসর জোট প্রার্থী হবে না ইনশাআল্লাহ।"
পিরুল মাহমুদ লিখেছেন, "মোমেন ভাই প্রচুর খাইছে, খেয়ে লাল এমপি কারো মামাবাড়ির আবদার না। রাজবাড়ী-২ আসনে আওয়ামী লীগের দোসরদের কোনো ঠাঁই নাই।"
এভাবেই শত শত ফেসবুক ব্যবহারকারী নানা ধরনের উক্তি-সহ তিনটি ছবি আপলোড করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে এনডিএম মহাসচিব ও রাজবাড়ী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোমিনুল আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "জীবনে ১ ঘণ্টার জন্যও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বা এর কোনো অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সদস্য ছিলাম বা এদের কোনো কর্মসূচিতে আমার অংশগ্রহণ ছিল প্রমাণ করতে পারলে হাসিমুখে রাজনীতি ছেড়ে দেব। কোটা সংস্কার আন্দোলনের '১৮ এবং '২৪-এর অনেক নেতা যারা বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁরা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পদধারী সদস্য ছিলেন। তবে তাঁরা লেজুরবৃত্তিক রাজনীতির জীবন বেছে না নিয়ে হাসিনা পতনের আন্দোলন করেছেন।"
তিনি আরও বলেন, "সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি আমার প্রোফাইলেই দেওয়া আছে। প্রতিটি ছবি পেশাদার কারণে মন্ত্রণালয়ের সেই সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা র্যাবের তৎকালীন ডিজির সঙ্গে তোলা।"
"এগুলোকে 'বিক্রি' করে যারা আমাকে 'আওয়ামী লীগ' বানিয়ে তাঁদের প্রিয় অভিভাবকের মনোনয়ন ফিরে পাবার জন্য 'খাটযোদ্ধা' হয়েছেন তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা," যোগ করেন তিনি।
মোমিনুল আমিন বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছাকৃত চরিত্র হননের আইনি প্রতিকারও রয়েছে। আমার পুরো রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের ছবি-ভিডিও ধারাবাহিকভাবে আছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে বা টেলিভিশন টক-শোতে দেওয়া আমার সব বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ডও আছে। এসব করে যারা আনন্দ পাচ্ছেন তাঁদের মনজিলে মকসুদে পৌঁছানো বহুদূর। ইনশাআল্লাহ দেখা হবে বিজয়ে।"
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর