• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / অপরাধ / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:৫১ দুপুর

৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান গুলিতে নিহত ১৮ মামলার আসামি

ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ৫ আগস্টের পর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েছিলেন চট্টগ্রামের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা (৪৩)। তখন হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ১৬টি মামলার আসামি ছিলেন। এরপর আরও দুটি মামলার আসামি হন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় পাঁচটি হত্যাসহ অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন। 

সবশেষ বুধবার (৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনি জনসংযোগে অংশ নিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন। এ সময় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও গুলিবিদ্ধ হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাদের নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে সরোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরশাদ উল্লাহ ও দলের আরেক কর্মী চিকিৎসাধীন আছেন। চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির সরোয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলা। ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ ১৮টি মামলা রয়েছে। চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা তিনি। 

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকালে নগরের চালিতাতলী এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেন সরোয়ার। এ সময় মুখোশধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে এরশাদ উল্লাহ, সরোয়ার ও যুবদল কর্মী শান্ত আহত হন। তাদের উদ্ধার করে নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে নিলে সরোয়ারের মৃত্যু হয়। এরশাদ উল্লাহ ও শান্ত ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সরওয়ার এলাকায় নিজেকে যুবদল নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। চট্টগ্রামের আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তার প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ারকে গুলি করা হয়। এর আগেও তাকে একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। গত ১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা শপিংমল থেকে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে ছোট সাজ্জাদ কারাগারে। তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সরোয়ারকে দায়ী করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ মার্চ নগরের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে গুলি চালিয়ে সরোয়ারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই সময় প্রাইভেটকারে থাকা দুজন ঘটনাস্থলে মারা যান। তারা হলেন- বখতিয়ার হোসেন মানিক (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩৬)। তারা সরোয়ারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি সরোয়ার ও তার দুই সহযোগী রবিন এবং হৃদয় গুলিবিদ্ধ হন সেদিন। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন রবিন এবং হৃদয়। এরপর থেকে সরোয়ার কোথায় ছিলেন, তা অজানা ছিল পুলিশ ও প্রশাসনের। তবে তিনি কারও রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন, শুরু থেকে এটি বলছিল স্থানীয় লোকজন। দুজনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা জবানবন্দিতে ও পুলিশকে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের নির্দেশে সরোয়ারকে গুলি করা হয়েছিল।

ছোট সাজ্জাদ বিদেশে পলাতক শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। একসময় সরোয়ার হোসেনও তার অনুসারী ছিলেন। ২০১৫ সালের পর থেকে সরোয়ার তাদের কাছ থেকে সরে যান। ২০০০ সালের ১২ জুলাই বহদ্দারহাটে সন্ত্রাসী হামলায় ছয় ছাত্রলীগ কর্মীসহ আট জন নিহত হন। সে ঘটনায় করা মামলায় সাজ্জাদ আলী (বড় সাজ্জাদ) সাজাপ্রাপ্ত হলেও পরে উচ্চ আদালত থেকে খালাস পান। এরপর তিনি বিদেশে পালিয়ে যান। তবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থামাননি। বিদেশ থেকে তার বাহিনীর মাধ্যমে বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও হাটহাজারীতে অপরাধ পরিচালনা করে আসছেন। তার এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন ছোট সাজ্জাদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরোয়ার এক মাস আগে বিয়ে করেন। তার বিয়েতে বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে সরোয়ারকে যোগ দিতে দেখা যায়। 

তবে বিএনপি বলছে, সরোয়ার তাদের দলের কেউ নন। বুধবার জনসংযোগে শত শত লোক অংশ নেন। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরোয়ারের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও গুলিবিদ্ধ হন।

সরওয়ার বাবলার স্বজনদের দাবি, বিদেশে পলাতক সাজ্জাদ হোসেনের অনুসারী আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী রায়হানের লোকজন সরওয়ারকে হত্যা করেছে। এর আগে তারা হত্যার চেষ্টা করেছিল। কয়েকদিন আগেও হত্যার হুমকি দিয়েছিল। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে বিএনপি নেতাদের আশ্রয়ে ছিলেন সরওয়ার।

পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচটি হত্যাসহ ১৮ মামলার আসামি সরোয়ার বাবলা বহদ্দারহাটে আট ছাত্রলীগ নেতা হত্যার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেনের অন্যতম সহযোগী। পরে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে আলাদা সন্ত্রাসী দল গড়েন সরোয়ার। তখন সাজ্জাদের ডান হাত হয়ে ওঠেন ছোট সাজ্জাদ। বর্তমানে কারাগারে সাজ্জাদ। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রায় দেড় দশক ধরে আলোচনায় রয়েছেন চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন ও নুরনবী ম্যাক্সন। আগে তারা পরিচিত ছিলেন বড় সাজ্জাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে। বড় সাজ্জাদ চট্টগ্রামে আট খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন।

২০১১ সালের জুলাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে গ্রেফতার হন ম্যাক্সন। তার দেওয়া তথ্যে বায়েজিদ এলাকা থেকে সরোয়ারকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তখন সরোয়ার ও ম্যাক্সনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি পিস্তল, একটি এলজি, একে-৪৭ রাইফেলের দুটি ম্যাগাজিন ও গুলি। ২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাতারে চলে গিয়েছিলেন সরোয়ার ও ম্যাক্সন। সেখানে বসেই তারা দেশে চাঁদাবাজি চালাতেন। প্রায় তিন বছর কাতারে ছিলেন সরোয়ার। সেখানে মারামারির এক ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এক মাসের সাজা দেয়।

সাজা শেষে সরোয়ারকে তারা দেশে পাঠিয়ে দিলে ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে চট্টগ্রাম এনে পরদিন ভোরে বায়েজিদ থানার খন্দকীয়া পাড়ায় সরোয়ারের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩০ রাউন্ড গুলিসহ একটি একে-২২ রাইফেল, চার রাউন্ড গুলিসহ একটি এলজি উদ্ধার করা হয়। চার বছর কারাগারে থেকে জামিনে বের হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২৭ জুলাই সরোয়ারকে পুনরায় গ্রেফতার করে পুলিশ। ৫ আগাস্ট পরবর্তী সময়ে তিনি আবার জামিনে ছাড়া পান।

এরপর থেকে বায়েজিদ, চান্দগাঁও এলাকার একটি বড় অংশে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। সরোয়ারের অনুসারীদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় ছোট সাজ্জাদের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। ছোট সাজ্জাদ বড় সাজ্জাদের হয়ে এবং সরোয়ার নিজেই তার অনুসারীদের দিয়ে চাঁদাবাজি এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতেন। এসব নিয়ে মূলত তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (উত্তর) উপ-পুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম বলেন,সন্ত্রাসী সরওয়ার বাবলা জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে ধরতে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালানো হলেও ধরা যায়নি। বুধবার বিকালে বিএনপির প্রার্থীর জনসংযোগ করার সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ঘটনায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ গুলিবিদ্ধ দুজন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]