চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলিতে সরোয়ার হোসেন বাবলা হত্যার ঘটনায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ছাড়া চট্টগ্রামের চালিতাতলী ও রাউজানে গোলাগুলির ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার সাতজনের নাম উল্লেখ করে সরোয়ারের বাবা আব্দুল কাদের মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি জসিম উদ্দিন। ওসি বলেন, মামলায় রায়হান, ইমনসহ সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নগরীর হাজীরপুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুই জন হলেন- মো. আলাউদ্দিন ও হেলাল। তারা দুই জনই মামলার এজাহারনামীয় আসামি। আলাউদ্দিনের স্ত্রীর দাবি, তার স্বামী বিএনপি’র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এ ঘটনার সাথে তিনি কোনো ভাবেই ‘সম্পৃক্ত’ নন।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। তবে তারা মামলার অন্যতম আসামি সন্ত্রাসী সাজ্জাদসহ অন্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো বলে স্বীকার করেছে। প্রকৃত তথ্য পেতে তাদের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।”
চট্টগ্রামে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রায় দেড় দশক আগে আলোচনায় আসে সরোয়ার হোসন বাবলা ও তার বন্ধু নুরুন্নবী ম্যাক্সনের নাম। সে সময় তারা পরিচিত ছিলেন চট্টগ্রামে আট ছাত্রলীগ নেতা খুনের অন্যতম আসামি সাজ্জাদ হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে।চালিতাতলী এলাকার আব্দুল গণি কন্ট্রাক্টরের ছেলে সাজ্জাদের নাম আলোচনায় আসে নব্বই দশকের শেষ দিকে। তখন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ‘ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত এই যুবক খুনসহ অনেক মামলার আসামি হন। ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রামে আট ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী হত্যায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ড পেয়েছিলেন সাজ্জাদ। পরে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় খালাস পান। এক সময়ের ‘শিবির ক্যাডার’ সাজ্জাদকে ধরতে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিস’ও ছিল। এই সাজ্জাদের সঙ্গে চলার পথে বিরোধ দেখা দিলে আলাদা দল গড়েন সরোয়ার। তখন সাজ্জাদের ডান হাত হয়ে ওঠেন ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদ। বায়েজীদ, চান্দগাঁও এলাকার একটি বড় অংশে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন সময়ে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ারের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষের খবর শোনা যায়। বড় সাজ্জাদের হয়ে ছোট সাজ্জাদ এবং সরোয়ার নিজেই তার অনুসারীদের দিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। এর মধ্যে বুধবার প্রকাশ্য গুলিতে প্রাণ হারান সরোয়ার।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর