ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) নিজস্ব আইনজীবীরা গাজা যুদ্ধ চলাকালে এমন প্রমাণের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন যা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগকে সমর্থন করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছিল বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশ না করা পাঁচজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সময় আইডিএফ-এর কিছু আইন কর্মকর্তা উচ্চপর্যায়ে সতর্ক করেছিলেন যে সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের মধ্যে পড়তে পারে। এই সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা গোয়েন্দা তথ্যের অংশ হিসেবে বাইডেন প্রশাসনের শেষ দিকে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছায়।
এ ছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কিছু আইন কর্মকর্তা আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের শামিল হতে পারে। তবে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে “যুদ্ধাপরাধ” হিসেবে কোনো ঘোষণা দেননি।
রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রশাসন পর্যালোচনা করে দেখেছে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই যে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক নাগরিক বা মানবিক সহায়তাকর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বা ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করেছে। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আইনের আওতায় ইসরায়েলকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ করার মতো কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি হয়নি।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে নৈতিক ও কৌশলগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে হতে পারে, যা দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সামরিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইতোমধ্যে ইসরায়েল ও হামাসের নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক অস্বস্তি তৈরি করেছে।
সূত্র: রয়টার্স।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর