বরগুনার পাথরঘাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে দমাতে দ্রুত বিচার আইনে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেছিলেন বরগুনার আইনজীবী সহকারী (মহরার) মো. বাদশা মিয়া। কিন্তু বাদী বাদশা মিয়ার দায়ের করা মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সাত দিনের কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন বরগুনার দ্রুত বিচার আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, শরিয়ত উল্লাহ।
আজ রোববার আদালত এই রায় প্রদান করেন। বাদী বাদশা মিয়ার উপস্থিতিতে তার দায়ের করা মামলা, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন এবং চলমান বিচার কার্যক্রম চলাকালীন এজলাসে বাদীর করা সাক্ষীদের সাক্ষ্য মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বাদী বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলাধীন নাচনাপাড়া ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের মৃত হামেজ সিকদারের ছেলে মো. বাদশা মিয়া (৫৮) কে সাত দিনের কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের গত ২৯ এপ্রিল মো. বাদশা মিয়া মোকাম বরগুনা বিজ্ঞ আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন (দ্রুত বিচার) ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার আইন ২০০০ সংশোধিত ২০১০ এর ৪/৫ অনুযায়ী ওই একই ইউনিয়নের একই ওয়ার্ডের নাসির হাওলাদার, রিয়াজ, সবুজ, হায়দার মিয়া, বাদল, তিতাস ও কাকচিড়া ইউনিয়নের শিংড়াবুনিয়া গ্রামের মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- সি/আর ৭০/২০২৫ (পাথরঘাটা)।
মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক তদন্তের জন্য পাথরঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জকে দিলে তিনি তদন্তপূর্বক একটি প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন। যেখানে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, মামলায় উল্লেখ করা দু'টি তারিখে আসামি কর্তৃক বাদীর স্ত্রীর নিকট চাঁদা দাবি করা এবং এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাদশার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫৫) বিবাদীদের হাতে জখম হওয়ার যে অভিযোগ করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদীর চিকিৎসাপত্রানুযায়ী পিরোজপুর জেলাধীন মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ চঞ্চল গোলদার বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কারণে চিকিৎসা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। বাদী উক্ত প্রতিবেদনের অসত্য দাবি করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাক্ষীদের উপস্থিতিতে আজ শুনানির দিন ধার্য করা হয়। শুনানিকালেও মামলাটি মিথ্যা মর্মে আদালতের নিকট সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয়। আদালত মামলাটি খারিজ করেন এবং মিথ্যা মামলা দায়ের করায় কেন বাদীকে সাজা প্রদান করা হবে না সে মর্মে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু বাদী সন্তোষজনক জবাব দিতে না পেরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত অপরাধের ধরন ও প্রকৃতি বিবেচনায় বাদী মো. বাদশা মিয়া (৫৮) কে সাত দিনের কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর