থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী সমুদ্র এলাকায় রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকা ডুবে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করছে উদ্ধারকর্মীরা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার উপকূলীয় শহর লাংকাবির কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দেশটির সমুদ্র পুলিশ জানায়, উদ্ধার তৎপরতায় এখন পর্যন্ত ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, অপরদিকে থাই কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেছে আরও ৪ জনের মরদেহ। এছাড়া ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা মুসলিম এবং দু’জন বাংলাদেশি।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, নৌকাটি দুই সপ্তাহ আগে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করে। পথে কিছু যাত্রী অন্য এক নৌকায় স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। পরে এই নৌকাটি মালয়েশিয়ার উপকূলের কাছাকাছি এসে উল্টে যায়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, চলতি বছর নভেম্বরের শুরুর দিক পর্যন্ত মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫ হাজার ১০০ রোহিঙ্গা সমুদ্রপথে পালিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে ৬০০ জনেরও বেশি এখনো নিখোঁজ বা মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি নিপীড়িত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। ২০১৭ সালে দেশটির সেনাবাহিনীর কঠোর অভিযানের পর লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকেই মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছাতে তারা প্রায়ই জীবনঝুঁকি নিয়ে বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। সমুদ্রে ও আকাশে অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করছে, রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় ও বৈধ অভিবাসনপথ না থাকায় তারা মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় বাধ্য হচ্ছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর