জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহকের দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের সাবেক এক কর্মকর্তাসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলার বিচার শেষে এই রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন- ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবির, নগরীর খুলশী এলাকার লাবীবা ট্রেডিং নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক জাকির হোসেন বাপ্পী এবং আজম চৌধুরী নামে আরেক ব্যক্তি। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত দণ্ডিত জাকির হোসেন বাপ্পীর স্ত্রী ফারজানা হোসেন ফেন্সীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি মোকাররম হোসাইন বলেন, আসামিদের মধ্যে ইফতেখারুল কবির ও আজম চৌধুরী প্রত্যেকের ১৪ বছর করে সাজা এবং জাকির হোসেনের আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মামলার আরেক আসামি ফারজানা হোসেন ফেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বিচারক। দণ্ডিত তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১৩ নম্বর রোডের ৩০২ নম্বর খান ভিলার বাসিন্দা প্রবাসী আবুল মনসুর খানের ২ কোটি ৬৫ লাখ ৭৩ হাজার ১০৬ টাকা আত্মসাৎ করেন দণ্ডিত আসামিরা। তারা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের এফডিআরের টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই সময় তারা গ্রাহককে ভূয়া এফডিআর দেখিয়ে ওই টাকা গ্রাহকের চেকের মাধ্যমে বিভিন্ন অংকের টাকা তুলে নেয়।
২০১৯ সালের ২২ অগাস্ট ইস্টার্ন ব্যাংকের পক্ষে চান্দগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখার সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ম্যানেজার ইফতেখারুলের বিরুদ্ধে। এর প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
২০১৯ সালের ২২ আগস্ট এ ঘটনায় মহানগরের চান্দগাঁও থানায় জিডি করেন ভুক্তভোগী গ্রাহক। ওই অভিযোগ দুদকে পাঠানোর পর তদন্ত হয়। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৪ অক্টোবর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর তৎকালীন উপ-পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল কবির চন্দন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর দুদকের পাঁচ কর্মকর্তা বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ১৩টি মামলা করেন। তদন্তে তারা ১২ কোটি ৯৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৩৩ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পারস্পরিক যোগসাজশে জালিয়াতি, প্রতারণা, মিথ্যা নথি তৈরি, গ্রাহক ও ব্যাংককে মিথ্যা হিসাব বিবরণী দেওয়ার প্রমাণ পান। ওই মামলাগুলোর একটি মামলায় আজ (মঙ্গলবার) আদালত রায় দেন। দণ্ডিত আসামিরা বিভিন্ন মামলায় বর্তমানে কারা ভোগ করছেন।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর