জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মদিন আজ (১৩ নভেম্বর)।
এদিনে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্ত, শুভানুধ্যায়ী ও স্বজনরা ভিড় করেছেন গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে। সকাল থেকেই সেখানে শুরু হয় স্মরণ আর শ্রদ্ধার নানা আয়োজন।
সকালে হুমায়ূন আহমেদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিনিত ও নিষাদ। এ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন লেখকের অসংখ্য ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ী।
হুমায়ূন আহমেদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়। সন্ধ্যায় নুহাশপল্লীর লিচুতলায় প্রজ্বলিত হয় এক হাজার সাতাত্তরটি মোমবাতি। এরপর কাটা হয় কেক। প্রিয় লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ভক্তরা কেউ এসেছেন ‘হিমু’র হলুদ পাঞ্জাবি পরে, কেউ হাতে ফুল নিয়ে।
কবর জিয়ারতের পর হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, হুমায়ূনের স্বপ্নের ক্যান্সার হাসপাতাল ও জাদুঘর বাস্তবায়নে আমরা ব্যর্থ হয়েছি—এই ব্যর্থতার দায় আমি নিচ্ছি। তাঁর স্বপ্ন পূরণের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, প্রতি বছরই লেখকের জন্মদিনে হাজারো মানুষ এসে নুহাশপল্লী ভরে তোলেন স্মরণ আর শ্রদ্ধার আবেগে।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি একই জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে। পিতা ফয়েজুর রহমান ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা ও লেখক, মা আয়েশা ফয়েজ গৃহিণী। শিক্ষাজীবনে তিনি বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে অনার্স ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
একাধারে শিক্ষক, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গীতিকার হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য জাদুকর। তাঁর প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে প্রকাশের পরই তিনি পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নেন। তাঁর সৃষ্ট জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর মধ্যে হিমু, মিসির আলী, শুভ্র ও রূপা এখনো বাঙালি পাঠকের কাছে অমর। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক ও একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
এরপর ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। পরদিন তাঁকে তাঁরই গড়া নুহাশপল্লীর লিচুতলায় দাফন করা হয়।
আজ তাঁর জন্মদিনে আবারও ভক্তরা বলছেন, কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ নেই, তবু তাঁর সৃষ্টি বাঙালির হৃদয়ে চিরজাগরুক।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর