ইসরায়েলি বসতকারীদের হাতে গাজার পশ্চিম তীরের একটি মসজিদে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক নিন্দা ছড়িয়ে পড়েছে। দখলকৃত পশ্চিম তীরে গত কয়েক মাস ধরে চলমান সহিংসতায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে এই হামলা।
বৃহস্পতিবার ভোরে সালফিটের কাছে দেইর ইস্তিয়া গ্রামের হাজ্জা হামিদা মসজিদে আগুন দেয় ইসরায়েলি বসতকারীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, মসজিদে আগুন লাগানোর পাশাপাশি দেয়ালে বর্ণবাদী ও ফিলিস্তিনবিরোধী গালি-গ্রাফিতি স্প্রে করা হয়। পবিত্র কোরআনের বেশ কিছু কপিও পুড়ে যায়।
ফিলিস্তিনের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে “বর্বর অপরাধ” হিসেবে আখ্যায়িত করে জানায়, দখলদার ইসরায়েলের ধর্মীয় স্থাপনা অবমাননার নীতি আরও প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে।
এদিকে একই দিনে হেবরনের কাছে বেইত উম্মার শহরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে দুই ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেছে বার্তা সংস্থা ওয়াফা।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (OCHA) জানায়, চলতি বছরের অলিভ হারভেস্ট মৌসুমকে কেন্দ্র করে ১ অক্টোবর থেকে অন্তত ১৬৭টি বসতকারীর হামলা হয়েছে পশ্চিম তীরে। এসব হামলায় ১৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন এবং প্রায় ৫,৭০০টি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের আড়ালে পশ্চিম তীরে সহিংসতা আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ডানপন্থী সরকারের অংশ হিসেবে পশ্চিম তীরকে দখল করে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করার তৎপরতাও জোরদার হয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, এসব হামলা প্রায়ই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতায় ঘটছে।
মসজিদে হামলার ঘটনার পর জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা এ ঘটনায় “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন” এবং ধর্মীয় স্থাপনায় এমন আক্রমণকে “সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য” বলেছেন। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল দখলদার শক্তি হিসেবে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে বাধ্য।
জর্ডান, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডও হামলার নিন্দা জানিয়েছে। জর্ডান বলেছে, বসতকারীদের সহিংসতা ইসরায়েলি সরকারের ‘চরমপন্থী নীতি’রই বহিঃপ্রকাশ। জার্মানি জানিয়েছে, এসব হামলা বন্ধ না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। সুইজারল্যান্ড জানিয়েছে, অবৈধ বসতি স্থাপন ও সহিংসতা—উভয়ই অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর