ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর/সংস্থায় উন্নয়ন প্রকল্প ও দৈনিক ভিত্তিক নিয়োজিত জনবলের চাকুরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের এক দফা দাবিতে শনিবার (১৫ নভেম্বর) তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশনের আহবায়ক জনাব মো. মমিনুর ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক জনাব মো. নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব জনাব মো. মাসুদুর রহমান, সহ সদস্য সচিব জনাব মো. রফিকুল ইসলাম ও জনাব মো. রেদওয়ান হোসেন, কোষাদক্ষ জনাব মো. মাহাতাব হোসেন, সদস্য জনাব মুন মুন খানম এবং জনাব মো. রুবেল হোসেনসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে আসা বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে কর্মরত প্রকল্পের জনবলসহ সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ ।
সকলকে নিয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তর/সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্প ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত জনবলের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের নিমিত্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখের ০০৪.০০.০০00.111.04.152.19.১২৫ সংখ্যক পত্র বাস্তবায়ন, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের মে ২, ১৯৯৫ তারিখের এস.আর.ও নং ৬৫ প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ২০ জুন ২০০৫ তারিখের এস.আর.ও নং ১৮২ প্রজ্ঞাপন হালনাগাদকরণের জন্য সরকারের প্রতি ‘১ দফা দাবী' জানাচ্ছি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন।
এছাড়া লিখিত বক্তব্যে যে বিষয়গুলো আসে সেগুলো হল-
১. উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে লিখিত, ব্যবহারিক, মৌখিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি। উন্নয়ন প্রকল্পে যথাযথ পদে নিযুক্তি লাভ করে সরকারি বেতনভূক্ত কর্মচারী হিসেবে বিভিন্ন দপ্তরে দক্ষতা অর্জিত কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং করতেছি। সবশেষে আমাদের চাকুরির কোন সংস্থান হয় নাই।
২. স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পর আমাদের মেধা, শ্রম ও দক্ষতা দিয়ে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পিত উন্নয়নের মধ্যে সাধারণ অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, পানি সম্পদ, পল্লী প্রতিষ্ঠান, ভৌত অবকাঠামো এবং দেশ বিদেশের বিভিন্ন উৎস হতে প্রাপ্ত সম্পদের সবোর্ত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে জনগণের দ্রুত জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছি। দৈনিক ভিত্তিক ও উন্নয়ন প্রকল্পের জনবল ৫-২০ বছর কিংবা আরও অধিক সময় ধরে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছি। এ সকল দক্ষ জনবল’কে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক অনন্য সুযোগ রয়েছে।
৩. এসোসিয়েশনের আহবায়ক জনাব মো. মমিনুর ইসলাম বলেন যে, বিগত সময়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের মে ২, ১৯৯৫ তারিখের এস.আর.ও নং ৬৫-আইন/৯৫/সম/বিধি-১/এস-৬/৯৪ সংখ্যক প্রজ্ঞাপন, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ২০ জুন ২০০৫ তারিখের এস,আর,ও নং ১৮২-আইন/২০০৫/সম/বিধি-১/এস-৯/২০০০, ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (ECNEC) সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দৈনিক ভিত্তিক ও উন্নয়ন প্রকল্পের বহু কিছু সংখ্যক জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন দপ্তরে মর্যাদার সহিত কর্মরত আছে। ** ক) জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত হয় নাই। এতে করে একই পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের মধ্যে চরম বৈষম্য হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ নং অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
৩ খ) যে সকল মামলা সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে চূড়ান্ত নিস্পত্তি হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে আইন ও বিচার বিভাগের মতামত গ্রহণ করে রায় বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ
করতে হবে***/
৪. এসোসিয়েশনের যুগ্ম আহবায়ক জনাব মো. নজরুল ইসলাম বলেন ‘প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর' কর্তৃক উদ্ভূত মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট প্রদত্ত ০২ জুলাই ২০১৯ তারিখে সিভিল আপিল নং 460/2017 রায়ে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে জনবল আত্নীকরণ/নিয়মিতকরণ সংক্রান্ত ৮ টি পর্যবেক্ষণ প্রদান করে। উক্ত পর্যবেক্ষণের আলোকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ০৩ মার্চ ২০২০ তারিখে ০৪.00.0000.111.04.152.20.38 সংখ্যক পত্র জারী করে। উক্ত পত্র জারীর পরও উক্ত জনবল রাজস্বখাতে স্থানান্তর হতে পারে নাই। অত:পর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৩ আগস্ট 2022 তারিখের এক স্পষ্টীকরণ পত্রের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে 004.00.0000.111.04.152.19.125 সংখ্যক পত্র জারী করে।
৫. এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব জনাব মো. মাসুদুর রহমান বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ নির্দেশনার আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক চাহিত মতামতের প্রেক্ষিতে ‘আইন ও বিচার বিভাগ' তৎসম্পর্কিত পজেটিভ মতামত দিয়েছে। এবং মন্ত্রনালয়ের ক্ষেত্রে নেগেটিভ মতামত দিয়েছে। সরকারের এ দ্বিমুখী সিদ্ধান্তের কারণে জনবলের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রকল্প ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত জনবলের সাথে চরম অবিচার করা হয়েছে।
৬. তিনি আরও বলেন যে, প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের পত্রের প্রেক্ষিতে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উক্ত ০৩ মার্চ ২০২০ তারিখে জারীকৃত ০৪.০০.০০০0.111.04.152.20.38 সংখ্যক পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প হতে রাজস্বখাতে জনবল স্থানান্তরের সুযোগ নেই মর্মে বিভিন্ন সময়ে মতামত প্রদান করে আসছে যা
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের মে ২, ১৯৯৫ তারিখের এস.আর.ও নং ৬৫ প্রজ্ঞাপন, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ২০ জুন ২০০৫ তারিখের এস.আর.ও নং ১৮৪ প্রজ্ঞাপন, ৩১ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে অনুষ্ঠিত ECNEC সভার সিদ্ধান্ত এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ০৪ এপ্রিল, 2022 তারিখের 12.21.0000.005.15.004.20.5366 সংখ্যক পত্রের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ** এ অন্যায্য মতামতের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত জনবলের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে হাজার হাজার কর্মঠ ও দক্ষ জনবলের শূন্যতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই সাথে উন্নয়ন প্রকল্প ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত জনবলের চাকরি এক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
৭. এসোসিয়েশনের অন্যতম সদস্য জনাব মো. মাহাতাব হোসেন বলেন সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপীল বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন হাইকোর্ট বিভাগের জন্য এবং সুপ্রীম কোর্টের যে কোন বিভাগ কর্তৃক ঘোষিত আইন অধস্তন সকল আদালতের জন্য অবশ্যপালনীয় হইবে। এবং সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রীম কোর্টের সহায়তা করিবেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর