মো: সাইফুল আলম সরকার, ঢাকা: BWTCC'র চলমান সংকট নিরসনকরে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশন (বিসিভিওএ) এবং কোষ্টাল শীপ ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়ার) এর পক্ষে আজ রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনী মিলনায়তনে এজ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এবং ইঞ্জিঃ মেহবুব কবির সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ১,৫০০ লাইটার জাহাজ এবং ১,৫০,০০০ এর বেশী শ্রমিকের জীবিকা এই নৌ পরিবহন খাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।
আমরা প্রকাশিত পণ্য পরিবহন নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালে পণ্য পরিবহন করিলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের কতিপয় পণ্যের এজেন্ট সিন্ডিকেট সিরিয়াল বিহীন পণ্য পরিবহন করছে। আমরা নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালে বসে থেকেও ২/৩ মাসে একটি ট্রিপ পণ্য পরিবহন করছি। অন্যদিকে সিরিয়াল বিহীন চলাচলকারী জাহাজগুলো অবৈধভাবে মাসে ৩/৪ ট্রিপ পণ্য পরিবহন করছে। কিছু ফ্যাক্টরির মালিকগণ নীতিমালা বহির্ভূতভাবে চার্টার জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন করছে।
কতিপয় পণ্যের এজেন্ট জাহাজ মালিকদের ২০২৩ইং সন পর্যন্ত নিষ্পত্তিকৃত ২১১ কোটি টাকা পরিশোধ করছেন না। পাশাপাশি তারা জাহাজ মালিকদের পরিবহন ভাড়া বাবদ পাওনা প্রায় ২০০ কোটি টাকাও পরিশোধ করছেন না। নিষ্পত্তিকৃত ডেমারেজের টাকার বিষয়ে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রাক্তন মহাপরিচালক মহোদয় গত ২৮/০২/২০২৩ ইং তারিখে সিদ্ধান্ত প্রদান করিলেও কতিপয় পণ্যের এজেন্টরা মালিকদের কোন টাকা পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন নাই। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কতিপয় পণ্যের এজেন্টগণ আমাদের জাহাজগুলোকে ভাসমান গোডাউন বানিয়ে বাজারে পণ্যের কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে অবৈধ মুনাফা অর্জন করছে। যেখানে নিয়ম অনুযায়ী ছোট জাহাজ সর্বোচ্চ ৮ দিনে এবং বড় জাহাজ ১১ দিনে খালি করার কথা থাকলেও ১০/১১ মাস ভাসমান গোডাউন করে রেখেছে। পণ্যের এজেন্ট কোন টাকা দেন না । একটি জাহাজের সর্বনিম্ন ষ্টাফ বেতন প্রতিমাসে ২ লক্ষ টাকা হলে ১১ মাসে হয় ২২ লক্ষ টাকা। মালিকগণ কিভাবে জাহাজ পরিচালনা করবে। মাননীয় ডিজি মহোদয়কে বার বার এ সমস্ত পণ্যের এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বললেও অদ্যাবধি পর্যন্ত তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এই সমস্যা সমাধান না হলে অচিরেই আরো জাহাজ ক্রাপ হয়ে যাবে। অবশিষ্ট্য যা থাকবে সেগুলোর মালিকগণ ষ্টাফ বেতন, জালানি তেল, জাহাজের মেরামত ও অন্যান্য খরচ পরিশোধ করতে না পারায় জাহাজ চালানো সম্ভব না ।
আমরা সরকারী নীতিমালার পক্ষে, আমরা সরকারী নীতিমালার বাস্তবায়ন চাই । তাই আমাদের দাবী : -
১। পণ্য পরিবহন নীতিমালা-২০২৪ বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের পক্ষপাতমূলক আচরন বন্ধ করতে হবে।
৩। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের পণ্যের এজেন্টের সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে।
4। BWTCC' র পরিচালনা পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠর ভিত্তিতে হতে হবে ।
৫। বকেয়া ডেমারেজের ২১১ কোটি টাকা সহ চলমান সমস্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
৬। পণ্য পরিবহন করে জাহাজ ভাসমান গোডাউন করা বন্ধ করতে হবে।
৭। সমস্ত জাহাজ নৌ নীতিমালা অনুযায়ী সিরিয়ালভূক্ত হয়ে চলতে হবে।
৮। ফ্যাক্টরী মালিকদের নীতিমালা বহির্ভূত চার্টার জাহাজে পণ্য পরিবহণ বন্ধ করতে হবে।
৯। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সদস্যব্যতিত কমার্শিয়াল পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে হবে।
১০। সমুদ্র বন্দর হইতে বাল্কহেডে পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে হবে।
আমরা সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়নের এবং জাহাজ মালিকদের ন্যায্য দাবী করছি। এই সমস্যা সমাধান করা না হলে ষ্টাপের বেতন ও অন্যান্য খরচ দিয়ে জাহাজ চালানো সম্ভব হবেনা। তাই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান করতে হবে। অন্যথায় ১৫ দিন পর জাহাজ চলাচল বন্ধ হলে এর দায় দায়িত্ব যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে এর জন্য আমরা দায়ী থাকিব না ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর