বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণার আগের দিন, তার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে দলের সমর্থকরা আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং পরিস্থিতি সহিংসতার দিকে গড়াতে পারে।
সজীব ওয়াজেদ রোববার রয়টার্সকে বলেন, সোমবার রায়ে হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হতে পারে এবং সম্ভবত মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, তার মা ভারতে নিরাপদে আছেন এবং দিল্লি সরকার তাকে “রাষ্ট্রপ্রধানের মতো” নিরাপত্তা দিচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে শিক্ষার্থীনেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনপীড়ণে প্রায় ১,৪০০ মানুষ নিহত ও হাজারো মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। হাসিনা এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, তারা আপিল করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া না হয়। তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আমাদের প্রতিবাদ আরও শক্তিশালী হবে। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাহায্য না করে, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সহিংসতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।”
রায়ের আগের দিন ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং ১২ নভেম্বর শহরে ৩২টি বিস্ফোরণের ঘটনা রিপোর্ট করা হয়। এছাড়া বহু বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নাশকতায় জড়িত সন্দেহে আওয়ামী লীগ কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সরকার অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে, ৪০০-এর বেশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে, চেকপোস্ট শক্ত করা হয়েছে এবং জনসমাবেশে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। প্রশাসনের বক্তব্য, মূল লক্ষ্য হল সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
সজীব ওয়াজেদ আরও বলেছেন, দেশে দলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে এবং চলমান প্রতিবাদ ও অবরোধ আরও বাড়বে। তিনি বলেন, “আমরা লড়াই চালিয়ে যাব, যে কোনো উপায়ে।”
শেখ হাসিনা ২০২৪ সালে চতুর্থবারের মতো নির্বাচনে বিজয়ী হলেও বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার পরিস্থিতি উল্টো দিকে এসেছে—সজীব ওয়াজেদ বলছেন, তার মা ক্ষুব্ধ ও দৃঢ়সংকল্প, এবং তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
সূত্র-রয়টার্স।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর