• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৭ সেকেন্ড পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:৪৬ বিকাল

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হলো কাদের, কী আছে চুক্তিতে?

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এপিএম টার্মিনালস বিইভি-এর সঙ্গে ৩০ বছরের কার্যক্রম ও কার্যসম্পাদন-ভিত্তিক বর্ধিত মেয়াদসহ একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।

এপিএম টার্মিনালস বিইভি ডেনমার্কের এ. পি. মোলার ফাউন্ডেশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইন্টিগ্রেটেড লজিস্টিকস কোম্পানি মায়ের্স্ক এ/এস (মায়ের্স্ক গ্রুপ)-এর একটি পূর্ণ মালিকানাধীন সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

এই চুক্তির মাধ্যমে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোর আওতায় লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল (এলসিটি) ডিজাইন, অর্থায়ন, নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আজ অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোস হ্যানসেন ও ঢাকায় ডেনমার্ক দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

পিপিপি অথোরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

সাখাওয়াত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, এ বিনিয়োগ দেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যুব সমাজের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি বয়ে আনবে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরো বলেন, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে, দেশের অনেক তরুণ, বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকরা চাকরির সুযোগ পাবে।

তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশে দক্ষ  জনশক্তির অভাব নেই এবং অনেক পরিশ্রমী বাংলাদেশি ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে।

উপদেষ্টা এই দক্ষ কর্মশক্তিকে দেশের ভেতরেই কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিগত সময়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কম ছিল উল্লেখ করে ড. এম সাখাওয়াত এই চুক্তিকে একটি ‘নতুন যাত্রা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিনি অন্যান্য দেশকেও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি অন্যান্য দেশকেও বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের পরিশ্রমী জনগোষ্ঠীর কারণে, দেশটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

সাখাওয়াত আশা প্রকাশ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃসরকারি সহযোগিতা প্রকল্পটির জাতীয় স্বার্থ নিয়ে যে কোনো সংশয় দূর করবে।

রাষ্ট্রদূত ব্রিক্স মোলার বলেন, বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও শক্তিশালী হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ ও টেকসই সহযোগিতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি তৈরি করছে।

তিনি বাংলাদেশ ও এই ঐতিহাসিক চুক্তিতে যুক্ত সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অভিনন্দন জানান।

তিনি আরো বলেন, ডেনমার্কের বৈশ্বিক দক্ষতা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে এ বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেন, এই নির্দিষ্ট প্রকল্পটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ ও ডেনমার্ক এখন টেকসই প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী অংশীদার।

ঐতিহাসিকভাবে, ডেনমার্ক বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে গভীরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল, যা বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রকৃতপক্ষে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ছিল বৈশ্বিকভাবে ডেনমার্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী দেশ।

রাষ্ট্রদূত আশাবাদী হয়ে বলেন, আরও বেশ কিছু প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং উভয় দেশের চমৎকার সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব অব্যাহত রাখার বিষয়ে তিনি অত্যন্ত আগ্রহী।

তিনি আরো বলেন, এই অনুষ্ঠান দুই দেশের অঙ্গীকার, গভীর বন্ধুত্ব ও শক্তিশালী অংশীদারিত্বের উদযাপন।

লিনা গান্ডলোস হ্যানসেন বলেন, এ প্রকল্পের সফলতা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অটল নিষ্ঠা ও প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।

তিনি এমন এক ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরেন, যেখানে বন্দর কেবল অবকাঠামো নয়, বরং মানুষ ও উদ্দেশ্যের একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম— যেখানে জাহাজ সহজে নোঙর করে, পণ্য দ্রুত স্থানান্তরিত হয় এবং কর্মীরা আরও নিরাপদ ও স্মার্ট পরিবেশে কাজ করে।

লিনা জানান, ডেনমার্ক থেকে জাপান এবং কোপেনহেগেন থেকে চট্টগ্রাম— এই অংশীদারত্ব বাণিজ্য একই দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে।

স্টেট সেক্রেটারি গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়নকে তুলে ধরে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ৩০ অর্থনীতির মধ্যে উঠে আসবে। এছাড়া দেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি ইতোমধ্যেই বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং অন্যান্য খাতেও দেশটির বিপুল সম্ভাবনা দৃশ্যমান।

সিপিএ (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ) জানায়, বন্দরের মালিকানা সিপিএর কাছেই থাকবে আর এপিএম টার্মিনালস ও তাদের স্থানীয় যৌথ উদ্যোগ (জেভি) অংশীদার কেবল নির্মাণ, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে। 

এর ফলে বাংলাদেশ সরকারের মূলধনী ব্যয়ের চাপ কমবে বলে জানায় সিপিএ।

এপিএম টার্মিনালস বিইভি ডেনমার্ক ভিত্তিক এ.পি. মোলারমায়ের্স্ক-এর পূর্ণ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। এটি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ টার্মিনাল অপারেটর (৩৩টি দেশে ৬০টিরও বেশি টার্মিনাল) এবং বিশ্বব্যাংক ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ ২০টি সেরা কনটেইনার বন্দরের মধ্যে ১০টি তারা পরিচালনা করে।

বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ায় (যেমন- চীন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া) তাদের বিস্তৃত অভিজ্ঞতার আলোকে লালদিয়া প্রকল্প বাংলাদেশে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ও অপারেশনাল দক্ষতা নিয়ে আসবে— যা দেশের লজিস্টিকস খাতকে এলডিসি-পরবর্তী যুগে ভবিষ্যত-প্রস্তুত করবে।

এই নতুন বন্দর বিদ্যমান ক্ষমতার দ্বিগুণ বড় কনটেইনার জাহাজ গ্রহণ করতে পারবে, প্রতি ইউনিট মালবাহী খরচ কমাবে এবং বিশ্বব্যাপী সরাসরি শিপিং সংযোগ সক্ষম করবে। রাজস্ব-ভাগাভাগি রেয়াত মডেলে নির্মিত এই প্রকল্পে বাংলাদেশ স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করবে, পাশাপাশি সরকারি মূলধনী ব্যয়ও কমবে।

এছাড়াও প্রথমবারের মতো দেশে ২৪/৭ বন্দর কার্যক্রম ও অনুমোদিত দৈর্ঘ্য ও ড্রাফটের জাহাজের জন্য রাতের নৌ-চলাচল (নাইট ন্যাভিগেশন) চালু হবে।

রেয়াত চুক্তির আওতায়, এপিএম টার্মিনালস বিইভি লালদিয়া, চট্টগ্রামে একটি সবুজফিল্ড বন্দর টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) নিয়ে আসবে। এটি হবে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এককভাবে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয় ইকুইটি বিনিয়োগ।

এপিএম টার্মিনালসের মতো বৈশ্বিক মানের বিনিয়োগকারী বন্দর খাতে প্রবেশ করায় অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা আরও বাড়বে, ফলে লজিস্টিকস, উৎপাদন এবং সংশ্লিষ্ট খাতে অতিরিক্ত বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকৃষ্ট হবে।

কুশল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com