বর্তমানে ফসিল গ্যাস উত্তোলনের যে হার, তা বিশ্বের জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টি করছে। গ্লোবাল সাউথের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জ্বালানির এই বাড়তি চাহিদার বিকল্প হিসেবে ফসিল গ্যাসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে বেছে নেওয়া জরুরি। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বিষয়ে প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিমালা গ্রহণ করে জি-২০ ও কপ-৩০ সম্মেলনের সিদ্ধান্তে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গত ১৯ নভেম্বর (বুধবার) সকালে মোংলার পশুর নদীতে বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত নৌবহরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশসহ পৃথিবীব্যাপী ফসিল গ্যাসের বিস্তার বন্ধের দাবিতে এই নৌবহর অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক জাতীয় সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার যৌথভাবে এই নৌবহরের আয়োজন করে।
বুধবার সকাল ১০টায় পশুর নদীতে নৌবহর কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশযোদ্ধা পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন মোংলা উপজেলা জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ হাওলাদার, ক্রীড়া সংগঠক মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার, পরিবেশ ও উন্নয়নকর্মী ফাতেমা জান্নাত, নারীনেত্রী মাসুদা পারভীন, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার মারুফ বিল্লাহ, পরিবেশকর্মী হাছিব সরদার, ইয়ুথ লিডার শেখ সিফাতুল্লাহ শুভ, মঈন গাজী, ডলার মোল্লা, মেহেদী হাসান প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ সরকারি-বেসরকারি দাতা সংস্থার উদ্দেশে বলেন, ফসিল গ্যাসের সম্প্রসারণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর হিসেবে কয়লা ও তেলের বিকল্প কখনোই ফসিল গ্যাস হতে পারে না। বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। এরপরে যথাক্রমে চীন, রাশিয়া, ইরান, কানাডা এবং কাতার। এসব দেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'স্টপ গ্যাস অ্যান্ড এলএনজি, উই নিড রিনিউয়েবল এনার্জি'। ইয়ুথ লিডার মেহেদী হাসান বলেন, শিল্পোন্নত দেশগুলোর বাইরে জ্বালানি চাহিদা ৮৫% বৃদ্ধি পাবে। বাড়তি চাহিদা পূরণের জন্য ফসিল গ্যাসকে বিকল্প হিসেবে প্রচার করছে গ্লোবাল নর্থের দেশগুলো। আমরা গ্লোবাল নর্থকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই তা হলো 'ডোন্ট গ্যাস দি সাউথ'।
উল্লেখ্য, ফসিল গ্যাস সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গ্লোবাল সাউথের এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় নানা কর্মসূচি পালিত হয়। বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে মোংলার পশুর নদীসহ ৯টি নদীতে নৌবহর অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ খবর