ঢাকায় সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অভিন্ন ও দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নির্মাণ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। শনিবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা বাণিজ্য, জ্বালানি, শিক্ষা, পর্যটন, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, বিনিয়োগ, পরিবহন ও বিমান চলাচলসহ বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা জোরদারে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ভুটানকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আখ্যা দিয়ে বলেন, দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, ভূগোল ও প্রকৃতি উভয়কে আরও কাছে এনেছে। জবাবে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এবং বাংলাদেশ ভুটানের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অন্যতম উৎস।
বৈঠকে উভয়পক্ষ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর পরিকল্পনা করে। শেরিং তোবগে আশা প্রকাশ করেন, ভুটানই প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ সই করবে। তিনি বলেন, এফটিএ দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ ছাড়া ভুটানের পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ দ্রুত কন্টেইনার ছাড়ের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। দুই দেশ পর্যটন উন্নয়নে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সম্মত হয়। বাংলাদেশ নীলফামারিতে নির্মাণাধীন এক হাজার শয্যার হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে ভুটানের নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা শিক্ষার সুবিধা নেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বাণিজ্য বিষয়ে দুই সমঝোতা স্মারক সই হয়। ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ চুক্তির আওতায় ভুটান বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানি করবে। ঢাকা জানায়, এই সহযোগিতা ভুটানের ডিজিটাল সংযোগ জোরদার করবে।
বাংলাদেশ দেশটির মেডিক্যাল কলেজ ও বুয়েটে ভুটানের শিক্ষার্থীদের আসন বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। ভুটান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটির উন্নয়ন এবং নারায়ণগঞ্জে কার্গো লোড-আনলোড সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়। দুই নেতা জলবিদ্যুৎ আমদানির সম্ভাবনা ও ভারতকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বাণিজ্যের বিষয়েও মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী তোবগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং উচ্চ লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর