• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ মিনিট পূর্বে
জান্নাতুল বিশ্বাস
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১২ দুপুর

নড়াইলে ব্যস্ত খেজুর গাছিরা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। খেজুর গাছের রস ও গুড় আমাদের সংস্কৃতির একটি বিশেষ অংশ। শীতের সকালে খেজুরের রস, রসের পিঠা, গুড়-মুড়ি আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের এটাই সেরা সময়। শীতের আগমন আসতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন নড়াইলের খেজুর গাছিরা।

এমন দৃশ্য দেখা যায় নড়াইলের বিভিন্ন স্থানে। তারই ধারাবাহিকতায় জেলার তিনটি উপজেলা সদর, লোহাগড়া ও কালিয়ার বিভিন্ন গ্রামের গাছিরা ও ব্যস্ত। ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে গাছিরা খেজুর গাছের মাথা পরিস্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে দিন দিন কমছে খেজুর গাছ।

সদর উপজেলার গাছি কবীর মোল্যা বলেন,‘ আমরা শীতের শুরুতে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছি। এক সপ্তাহ পর থেকে গাছে টিলে পাতা হবে। রস জ্বালিয়ে আমি গুড় তৈরি করে থাকি। প্রতি কেজি গুড় ৩ শত টাকা দরে বিক্রি হবে।,

তিনি আরও বলেন, ‘নড়াইলে খেজুর রস ও গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জেলায় যে পরিমাণ রস ও গুড়ের চাহিদা আছে সেই পরিমাণে রস ও গুড় উৎপাদন হয় না। কাঁচা রস কিনতে বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ তলায় এসে ভিড় করেন অনেকেই।,

শেখহাটি গ্রামের গাছি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রসের ও গুড়ের অনেক চাহিদা রয়েছে। তুলারামপুর, শেখহাটি, বেনহাটি, মুলিয়া, আগদিয়া এলাকা থেকে অনেকেই গাছ তলা থেকে রস কিনে নিয়ে যায়। এখানে যে পরিমাণ রসের চাহিদা আছে সেই পরিমাণ রস হয় না। কারন আগের থেকে খেজুর গাছ কমে গেছে। প্রতি বছরই কমে যাচ্ছে খেজুর গাছ। এতে খেজুর গাছের রস ও গুড় উৎপাদন কমে গেছে। এখনই নতুন করে গাছ লাগানোর উদ্যোগ না নিলে হারিয়ে যেতে পারে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস ও গুড়।

লোহাগড়া উপজেলার গাছি মো. নজরুল শেখ ও মশিয়ার শেখ বলেন, আমরা প্রতিবছর শীতকাল আসলেই খেজুর গাছ কাটার কাজ করে থাকি। আমি নিজের গাছ কাটার পাশাপাশি অন্যের গাছও কাটি। গাছ কাটলে টাকা পাই।

উপজেলার নখখালী গ্রামের মো. আশরাফুল বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শীতকালে খেজুরের রস না হলে আমাদের একদমই চলে না। আমরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা পায়েস খেয়ে থাকি। শীতের পিঠায় খেজুরের রস না হলে পিঠা ভালোলাগে না।

কালিয়া উপজেলায় গাছের সংখ্যা কমে গেছে, গাছির অভাবও প্রকট। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে এই চিরচেনা শীতের রসনাবিলাসী সংস্কৃতি। এই ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে স্থানীয় সাংবাদিক মো. খাইরুল ইসলাম চৌধুরী উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি রাজশাহী থেকে তিনজন অভিজ্ঞ গাছি এনে কালিয়া এলাকায় স্থানীয়দের পুনরায় খেজুর গাছ কাটা ও রস সংগ্রহে উৎসাহিত করছেন। ইতোমধ্যে তাদের হাতের কারুকাজে এলাকার খেজুর গাছে রস আসতে শুরু করেছে।

রাজশাহী থেকে আসা গাছি আজিজুর রহমান বলেন, ‘চার বছর আগে লোহাগড়ার লাহুড়িয়ায় খেজুর গাছ কাটতে এসে সাংবাদিক খাইরুল ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার মহাজন গ্রামে এসেছি। গাছের মালিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তিনি আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন। বর্তমানে নড়াগাতী থানার মহাজন উত্তরপাড়া ও কাঠাদুরা গ্রামে প্রায় ২০০ খেজুর গাছ কেটেছি। আমাদের ইচ্ছা, এলাকার মানুষকে খাঁটি খেজুর রস ও গুড় খাওয়ানো।,

গাছ মালিক আলেক ইসলাম বলেন, ‘আগে আমার খেজুর গাছ গুলো গাছির অভাবে কাটাতে পারতাম না। সাংবাদিক ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে গাছিদের গাছ কাটতে বলি। এতে আমরা রস ও গুড় খেতে পারবো। গাছের জন্য টাকাও পাবো।,

উপজেলার কাঠাদুরা গ্রামের মেহেদি হাসান তুষার বলেন, ‘একসময় কালিয়ায় খেজুর রসের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। এখন গাছ যেমন কমে গেছে, তেমনি গাছিও নেই বললেই চলে। সাংবাদিক খাইরুল ভাইয়ের এই উদ্যোগে আমরা নতুন আশার আলো দেখছি।,

সাংবাদিক খাইরুল চৌধুরী বলেন,‘একসময় আমার বাড়ির উঠানে খেজুর গাছ ছিল। গাছিরা এসে গাছ কাটত, আমরা খাঁটি খেজুরের রস ও গুড়ের তৈরি পিঠা খেতাম। এখন গাছিও নেই, গাছও নেই। তাই হারিয়ে যাওয়া সেই অতীত ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতেই আমার এই উদ্যোগ। আগামীতে চারা রোপণসহ এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।,

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৩ হাজার ৫৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে। যা থেকে ৩৫৪ মে.টন খেজুর রস সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যে রস থেকে ৫৩ মে.টন গুড় উৎপাদন হবে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে স্থানীয় গাছিদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিবেন। যাতে তারা আবারও এই পেশায় আগ্রহী হয়।,

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত রস সংগ্রহে উদ্যোগ নিয়েছেন কৃষি বিভাগ। প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিরাপদ রস সংগ্রহে গাছিদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।,#

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]