যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন সোমবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো-সংক্রান্ত “কার্টেল দে লোস সোলেস”-কে (Cartel de los Soles) বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। তবে মার্কিন প্রশাসন যে সংস্থাটিকে মাদুরোর নেতৃত্বাধীন বলে উল্লেখ করেছে, সেটি আসলে প্রচলিত অর্থে কোনো কার্টেল নয়।
এই পদক্ষেপটি মার্কিন প্রশাসনের উভমুখী প্রচেষ্টার অংশ, যা দেশটিতে মাদক পাচার রোধ এবং যুক্তরাষ্ট্রে নেশাজাতীয় দ্রব্য প্রবাহ বন্ধ করার লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সংস্থাটিকে পশ্চিম গোলার্ধে “সন্ত্রাসী সহিংসতার জন্য দায়ী” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনাও বিবেচনা করছেন। ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় সাগরে ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন করা হয়েছে এবং মাদকপাচার boats-এ আক্রমণ চালানো হয়েছে, যার ফলে ৮০-এর বেশি ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
কার্টেল দে লোস সোলেস নামটি প্রথম ১৯৯০-এর দশকে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের জন্য ব্যবহার করা হয়, যারা মাদকপাচারে জড়িত ছিল। পরবর্তীতে এটি পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অবৈধ খনি ও জ্বালানি পাচারের মতো কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ‘সোলেস’ বা সূর্য-চিহ্নটি উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের কাঁধে থাকা epaulette-কে নির্দেশ করে।
২০২০ সালে মার্কিন ন্যায় বিভাগ মাদুরো এবং তার নিকটতম পরিপ্রেক্ষিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নেশাজাতীয় সন্ত্রাস ও অন্যান্য অভিযোগ আনে, তখন এটি মাদুরো-নেতৃত্বাধীন একটি মাদক-সংস্থারূপে উন্নীত হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কোনো সংগঠিত গ্রুপ নয়, যাদেরকে সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, নিয়মিত বৈঠক হয় বা হায়ারার্কি থাকে।
এর আগে এই ধরনের বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থার লেবেল মূলত আল-কায়েদা বা ইসলামিক স্টেটের মতো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতা চালানো গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ফেব্রুয়ারি মাসে লাতিন আমেরিকার আটটি ক্রিমিনাল সংগঠনকেও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা মাদকপাচার, অবৈধ অভিবাসন ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত।
মাদুরো ও তাঁর সমর্থকরা মার্কিন সামরিক পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখছেন এবং এটিকে ভেনেজুয়েলার শাসক দলকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করছেন। এদিকে ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলও দীর্ঘদিন ধরে মাদুরোকে অপসারণের প্রতিশ্রুতি পুনরায় জোরদার করেছে।
মাদুরো এই মুহূর্তে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় রয়েছেন, যদিও ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী প্রার্থীর বড় ব্যবধানে জয় সত্ত্বেও তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাঁর এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ওপর বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্র- apnews.
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর