ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার হাসনহাটী থেকে সানবান্ধা পর্যন্ত ১০০০ মিটার এলজিইডির "ঝিনাইদহ জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন " প্রকল্পের প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে ক্ষুব্ধ স্থানীয় এলাকাবাসী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, বালি এবং খোয়া ব্যবহার করে চলছে নির্মাণ কাজ। এতে নির্মাণের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তাটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাস্তাটির কাজ শুরু হলেও এখনো তা শেষ হয়নি। "সৈকত এন্টারপ্রাইজ" নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তাটি নির্মাণে কাজ করছে। এলজিইডির প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রকল্পের এই কাজে কোনো নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তাটি নির্মাণের কয়েক মাস পূর্বে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট রাস্তার পাশে রেখে খোয়া তৈরি করা হয়। সে সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নিম্নমানের ইট তুলে নিয়ে এক নম্বর ইট দিয়ে কাজ করার কথা বারবার বললেও তারা কেউ কর্ণপাত করেনি। সম্প্রতি রাস্তাটির কাজ শুরু হলেও দেখা গেছে তড়িঘড়ি করে ওই ইট রাস্তায় ফেলে দ্রুত রুলার করে পানি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবস্থা এমন যেনো ঠিকাদার আর এলজিইডি অফিস মিলেমিশে রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম করছে। আর সেটা যদি না হবে তাহলে এলজিইডি অফিস অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই না কেন? নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় রাস্তাটির স্থায়িত্ব নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনিচ রহমান বলেন,নিম্নমানের ইট বালি দিয়ে রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে প্রতিবাদ করেও কোনো সমাধান হচ্ছে না; এলজিইডি অফিস ‘ম্যানেজ’ করেই চলছে এমন অনিয়ম।
কালীগঞ্জ এলজিইডি অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী এবং উক্ত রাস্তাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলহাজ উদ্দীনকে কাজের সাইডে গিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে অফিসে গিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর মান ঠিক আছে। সেগুলোর আলাদা আলাদা মান যাচায়ের ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মীর শহিদুল মানিক বলেন,রাস্তার কাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। ইট বালি ভালো দেওয়া হয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার স্যার দেখেছেন। রাস্তার কাজে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী ল্যাব টেস্ট আছে বলেও তিনি দাবি করেন।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সৈয়দ শাহরিয়ার আকাশ বলেন, আমি রাস্তাটি দেখে অনিয়ম পেলে অবশ্যই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজওয়ানা নাহিদ বলেন,নিয়ম বহির্ভূতভাবে রাস্তার কাজ করার কোনো সুযোগ নেয়। বিষয়টি আমি দেখছি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর