রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের বাজেকলা গ্রামে দশম শ্রেণির ছাত্রী ইভা খাতুনের (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে এলাকায় তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে পাশের বাড়ির এক নারী মাংস দিতে গিয়ে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ইভাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা মরদেহ নামিয়ে পুলিশে খবর দেন।
ইভার স্বামী কায়েস হোসেন (১৭) একই গ্রামের প্রবাসী রফিকুল ইসলামের ছেলে। দুজনেই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কোচিং সেন্টারে পরিচয়ের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, পরে প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে রূপ নেয়। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় উভয় পরিবারেরই আপত্তি ছিল। পরিবার রাজি না হওয়ায় কিছুদিন পালিয়ে থাকার পর তারা রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে করে। প্রায় ১৫ দিন আগে তারা কায়েসের বাড়িতে আসে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই কায়েসের পরিবার নবদম্পতিকে মেনে নেয়নি। বিশেষ করে কায়েসের মা বারবার তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাইতেন। ঘটনার দিন ইভা ও কায়েসকে খাবারও দেয়া হয়নি বলে জানায় প্রতিবেশীরা।
ইভার বাবা আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “ছেলের বাড়ির অবহেলায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।” তিনি জানান, এতদিন জামাইসহ মেয়ে তার বাড়িতেই থাকতো, কয়েকদিন আগে তারা কায়েসের বাড়িতে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় মেম্বার সিদ্দিক আহমেদ জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি মেয়েটিকে মৃত অবস্থায় পান। তিনি আরও জানান, প্রেম করে বিয়ে করায় বিষয়টি কায়েসের পরিবার মেনে নেয়নি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী এসআই সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিক সুরতহালে ইভার গলায় দাগ পাওয়া গেছে, তবে শরীরের অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন নেই। তিনি ঘটনাটিকে সন্দেহজনক বলে মন্তব্য করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইভার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি অপমৃত্যু মামলা নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৫ সালে দুজনেই এসএসসি পরীক্ষা দেয়; ইভা উত্তীর্ণ হলেও কায়েস অকৃতকার্য হয়। এই দম্পতির বিয়েকে কেন্দ্র করে চলমান পারিবারিক অস্বস্তির মধ্যেই ঘটে যায় এ মর্মান্তিক মৃত্যু।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর