ঢাকা ও আশপাশের এলাকা যেন ইদানিং ভূকম্পন এলাকায় পরিণত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও বিকেল সোয়া ৪টার দিকে অনুভূত হয়েছে, কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৬। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকায়।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছিল, তাকে গত দুই দশকের অন্যতম শক্তিশালী বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লেমন্ট–ডোহের্টি আর্থ অবজারভেটরি। ৫ দশমিক ৭ মাত্রার সেই ভূমিকম্পে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বহু ভবন ও স্থাপনায় ফাটল ধরে। ঢাকাসহ তিন জেলায় প্রাণহানি ঘটে এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজধানী এলাকায় ভূমিকম্পের প্রকৃত ঝুঁকি দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যমান। ভূতাত্ত্বিকদের আশঙ্কা, ঢাকার নিকটবর্তী মধুপুর ফল্ট জোনে যদি ৭ মাত্রার বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটে, তবে শহরের বহু এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ঢাকার কিছু এলাকা কম ঝুঁকিপূর্ণ হলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে উচ্চ ঝুঁকিতে।
বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি এলাকা হলো—সবুজবাগ, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, কাফরুল, ইব্রাহিমপুর, কল্যাণপুর, গাবতলী, উত্তরা, সূত্রাপুর, শ্যামপুর, মানিকদী, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, খিলগাঁও ও বাড্ডা। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যায়, পুরান ঢাকার মাটি তুলনামূলক শক্ত হলেও সেখানে বহু পুরোনো ও কাঠামোগতভাবে দুর্বল ভবন থাকায় বড় ধরনের কম্পনে ভেঙে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবীর জানান, ঢাকা শহরের ভেতরে ৮–৯ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো বড় ফল্টলাইন নেই। তবে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে মধুপুর অঞ্চলে ৭ মাত্রার কম্পন সৃষ্টির মতো সক্রিয় ফল্ট রয়েছে। তার মতে, একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে ঢাকার ভরাট এলাকা ও নতুন উন্নয়ন অঞ্চলগুলোতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এতে বিপুল প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং শহরের ভূপ্রকৃতিতে বড় পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর