রাশিয়ায় মতভিন্নতাকবলিত ব্যক্তিদের ওপর দমন-পীড়ন আরও কঠোর আকার ধারণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে (এইচআরডব্লিউ) ‘অবাঞ্ছিত সংগঠন’ ঘোষণা করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার রাশিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর এ ঘোষণা দেয়।
রুশ আইনে ‘অবাঞ্ছিত সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকা বা সহযোগিতা করা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। ফলে এইচআরডব্লিউকে রাশিয়ায় সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে, আর যে কেউ এ সংস্থার সঙ্গে কাজ করলে বা সমর্থন দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।
ক্রেমলিনসমালোচক, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের দমন-পীড়নের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই এসব নিষেধাজ্ঞা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
একই দিন রুশ কর্তৃপক্ষ নারীবাদী পাঙ্ক ব্যান্ড ‘পুসি রায়ট’-এর বিরুদ্ধে ‘চরমপন্থী সংগঠন’ হিসেবে মামলা খোলার ঘোষণা দেয়। এর আগের দিন রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট প্রয়াত বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনির প্রতিষ্ঠিত অ্যান্টি-করাপশন ফাউন্ডেশনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করে। সংগঠনের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সত্তাকে লক্ষ্য করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
অ্যান্টি-করাপশন ফাউন্ডেশন এক বিবৃতিতে বলেছে, সরকার শিগগিরই আরও স্বাধীন গণমাধ্যম, মানবাধিকার ও স্থানীয় উদ্যোগকে ‘সন্ত্রাসী’ বা ‘অবাঞ্ছিত’ বলেও ঘোষণা করবে—এটাই এখন রুশ নীতি।
রাশিয়ার ‘অবাঞ্ছিত সংগঠন’ তালিকায় বর্তমানে ২৭৫টির বেশি সংস্থা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি, চ্যাথাম হাউস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এবং পরিবেশবাদী সংস্থা WWF–এর মতো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান।
১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন পর্যবেক্ষণ করে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কড়া সমালোচনাকারী এই সংস্থা সম্প্রতি ইউক্রেনের খেরসন অঞ্চলে রুশ সেনারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ড্রোন দিয়ে ইচ্ছাকৃত হামলা চালিয়েছে—এমন তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে।
সূত্রে: এপি নিউজ।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর