ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়জোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ও সহযোগিতায় বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়। সহকারী শিক্ষকরা বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত তিন দফা দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২ ডিসেম্বর প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির গণিত ও সমন্বিত বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, তারা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে পরীক্ষা বর্জন করেন। ফলে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরীক্ষার আয়োজন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মঙ্গলবার রাত ৮টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদের নেতৃত্বে সকল প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে এক জরুরি জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পরদিন নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরও কিছু বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের অসহযোগিতা অব্যাহত থাকায় জটিলতা তৈরি হয়।
সরেজমিন বড়জোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষা না নেওয়ার অনুরোধ জানান এবং অফিস ও শ্রেণীকক্ষ সিলগালা করার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে প্রধান শিক্ষককে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সারোয়ার ভূঁইয়া পলাশ মসজিদের মাইক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। অভিভাবকরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠালে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাবা আক্তার ও স্থানীয় গৃহবধূ লাকি আক্তারের সহায়তায় পরীক্ষাটি সম্পন্ন করা হয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক শিল্পী আচার্য।
অভিভাবক মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, "কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে ফেলে কোনো দাবি আদায় করা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এই ধরনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।"
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমদ বলেন, "প্রশাসনিক কঠোর নজরদারির মধ্য দিয়ে উপজেলার ১৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩১টিতে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়নি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সেখানে যথারীতি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।"
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর