• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
তারেক পাঠান
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:১০ দুপুর
নরসিংদী-২ আসনে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই

মাঠে সরব বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নরসিংদী ও গাজীপুর জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত পলাশ উপজেলা অর্থনীতিতে সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানা, ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, অ্যাকোয়া রিফাইনারি, জনতা জুট মিল, ফৌজি চটকল, প্রাণ কোম্পানি, দেশবন্ধু সুগার মিল, দেশবন্ধু ফুড ওয়ার, ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, এ কে খান অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ছোট-বড় অসংখ্য শিল্প কারখানা রয়েছে।

শিল্পনগরী নরসিংদী-২ সংসদীয় আসনটি পলাশ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও নরসিংদী সদর উপজেলার (একাংশ) আমদিয়া, পাঁচদোনা ও মেহেরপাড়া তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮২ হাজার ৯৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৪১ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬১০ জন ও হিজড়া ভোটার ৫ জন।

২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ আত্মগোপনে চলে গেলে ও জাতীয় পার্টির কার্যক্রম না থাকায় আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীহীন হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

এদিকে আশার আলো দেখছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটের মাঠে প্রার্থীরা এখন সরব হয়ে উঠেছেন। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীরা।

তবে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এবার ভিন্ন পথে হাঁটছেন, সাধারণ ভোটাররাও এবার ভোট দেবেন অঙ্ক কষে। কোনো দলের অন্ধ অনুসারী না হয়ে নিজেরা হিসাব-নিকাশ করে প্রার্থী বেছে নেবেন বলেই স্পষ্ট জানিয়েছেন।

নরসিংদী-২ (পলাশ ও সদরের একাংশ নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন ২০০): ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বরাবরই ড. আবদুল মঈন খান এ আসন থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়ে এমপি ও মন্ত্রীত্ব লাভ করেন। এ আসনটি গেল ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পলাশের বিএনপির শক্ত ঘাঁটির প্রথম পরাজয় হয়। এরপর থেকে অসংখ্য মামলা-হামলার ভয়ে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়তে হয় বিএনপিকে।

২৪-এর ছাত্র-জনতার আন্দোলন জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ আত্মগোপনে চলে গেলে নিজেদের ঘাঁটি পুনরায় ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে উপজেলা বিএনপি। তবে মাঠে নেই জাতীয় পার্টি। এই আসন থেকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ, গণসংযোগসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

পলাশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সাত্তার জানান, সাংগঠনিকভাবে আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী। আমাদের নেতা ড. আব্দুল মঈন খান একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ এবং সৎ লোক, তাঁর ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিধাবোধ নেই। বর্তমানে নির্বাচনী মাঠ তাঁর খুব ভালো অবস্থানে আছে, এবং জনগণ তাঁকে খুব পছন্দ করে। তিনি সাবেক মন্ত্রী ও দেশবরেণ্য আন্তর্জাতিক মানের রাজনীতিবিদ। যদি সুস্থ নির্বাচন হয় তাহলে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।

ছাড় দিতে নারাজ জামায়াত: নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তারা এ আসনটি ছাড় দিতে নারাজ। জামায়াত থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও উপাধ্যক্ষ মাওলানা আমজাদ হোসাইন।

তিনি জানান, নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড যে কথাটা নির্বাচনে এবং রাজনীতিতে আছে, এটা ছাড়া আসলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, অংশগ্রহণমূলক হয় না, জনগণের ভোট দেওয়ার যে অধিকার সেটা প্রয়োগ করতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও এটাই সত্য যে আমাদের নরসিংদী-২ আসনে ব্যক্তিগতভাবে আমি যখন প্রচার-প্রচারণায় যাই, আমার ভোট কর্মী যারা আছে তারা যখন প্রচার-প্রচারণায় যায়, কেমন আছেন তখন তাদেরকেও হুমকি ও অপমানিত করা হয় কেন দাঁড়িপাল্লার প্রতীকে গেল এর জন্য জবাবদিহিতা করতে হয়। আমাদের সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙা হচ্ছে, দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলবে ইত্যাদি নানান হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

অর্থাৎ নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যে শব্দ বর্তমানে নরসিংদী-২ আসনে এটা নেই, প্রতিনিয়ত আমরা হুমকি-ধমকির সম্মুখীন হচ্ছি। এই ক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ঠিক না হলে নির্বাচন অর্থবহ ও নিরপেক্ষ হবে না ও জনপ্রত্যাশা পূরণ হবে না। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে আশা করা যায় জনগণের ম্যান্ডেট যেটা আছে জামায়াতে ইসলামের প্রতি ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রতি এবং আমার প্রতিও তাদের যে মহব্বত, ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস যেটা আছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ জিতে যাবে, জনগণের জয় লাভ হবে, দাঁড়িপাল্লার জয় হবে।

আশার আলো দেখছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে: এ আসনে এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জাতীয় নাগরিক পার্টি মনোনীত প্রার্থী। তিনি জানান, আমাদের ফিল্ড যথেষ্ট ভালো বর্তমানে আমাদের জনসমর্থন অনেক বেশি এবং মানুষজন আমাদেরকে অনেক পছন্দ করছে,সুষ্ঠু নির্বাচন হলে  ইনশাআল্লাহ আমরা এখান থেকে উঠে আসতে পারবো। তবে কিছু কিছু জায়গায় আমাদের পোস্টার ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা হচ্ছে, আমাদের নেতাকর্মীদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আমাদের উঠান বৈঠকে যেন মানুষজন না আসে সে বিষয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে ওদেরকে নিষেধ করা হচ্ছে,পলাশে কিছু রাজনৈতিক দুষ্কৃতিকারী এবং পলাশে একটি রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে এগুলো হয়ে আসছে। এখন এটা সবাই জানে, পলাশের ডাঙ্গায় আমাদের পোস্টার লাগানোর সময় বিএনপির লোকজন  বাধা  দিয়েছিল, পরে আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম,ধারণা করছি এখন তারাই এসব হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। সুষ্ঠ¦ ভোট হলে নির্বাচনে জয়লাভের বিষয়ে আমি আশাবাদী, জনগণের সমর্থন আমি পাব।

 ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মুহসীন আহমেদ। তিনি জানান, ইনশাআল্লাহ জনসমর্থন আমাদের অনেক ভালো, আমি শতভাগ  আশাবাদী, কিন্তু একটা পক্ষ আমাদের লোকজনকে বাধা বিপত্তি দিচ্ছে এবং আমাদের পোস্টার ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলছে, সন্দেহ তো করছি বিএনপি কে কিন্তু আমরা তো আর সরাসরি দেখছি না, সামনে আসছে না ওরা, এখানে প্রতিদ্বন্দিয়ার কে থাকবে, আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রত্যেকটা ওয়ার্ডেই আমার কমিটি করা হয়েছে নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটি সকল কিছুই করা হচ্ছে এবং আমাকে ও সরাসরি কোন বাধা দেয়নি, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে  তিনি ও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে তিনি জানান।

এদিকে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এবার হিসাব নিকাশ করে ভোট দেবেন। কোনো মার্কা বা দলের প্রার্থীর বিবেচনা করা হবে না। যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। নির্বাচন এলেই প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতির ঝুলি নিয়ে হাজির হন; কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে তাঁদের দেখা মেলে না। কোনো প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সাধারণ মানুষের পক্ষে নানা ধাপ পার হওয়া খুবই কষ্টকর। কিন্তু এরপর আমাদের সুখ-দুঃখে অতীতে যাঁরা পাশে ছিলেন, এবার আমরা তাঁদেরই ভোট দেব।

তবে কিছু নিরব ভোটাররা জানান,শান্তির নগরী পলাশ উপজেলায় এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অশান্ত হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি প্রতিদিনই বাড়ছে, কিন্তু এ অবস্থার উন্নয়নে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। আগের নির্বাচনে নিজের ভোট দিতে না পারায় এখনও ক্ষুব্ধ। তবে ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি ভালো থাকলে এবার অবশ্যই যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে যাব।

মাসুম/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]