রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারের অভিযান দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গর্তটি মাত্র ৮ থেকে ৬ ইঞ্চি ব্যাসের এবং গভীরতা প্রায় ২০০ ফুট। তবে উদ্ধারকাজ এখনও শেষ হয়নি, খনন কার্যক্রম চলছে বলে জানা গেছে এবং শিশু সাজিদকে উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “তাকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে আল্লাহ চাইলে অনেক কিছুই সম্ভব। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
উদ্ধার অভিযানে ধীরগতি, স্থানীয়দের ক্ষোভ
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুরুতেই দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালানো গেলে শিশুটিকে জীবিত পাওয়া যেতো। ধীরগতির অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই ঘটনাটির তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি তুলেছেন।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা খান জানান, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এলাকায় আরও এ ধরনের বিপদজনক গর্ত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
বিশ্বব্যাপী এমন উদ্ধার কঠিন: ফায়ার সার্ভিস
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, ২০০ ফুট গভীর ও সরু গর্ত থেকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করার প্রযুক্তি বিশ্বের কোথাও নেই। লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, “উন্নত দেশগুলোতেও এত গভীর জায়গায় পৌঁছাতে ৭৫ থেকে ৭৮ ঘণ্টা সময় লাগে। নিরাপত্তার জন্য আমরা পাশ থেকে গর্ত খুঁড়ে অনুসন্ধান করছি।”
প্রথম পর্যায়ে ৩৫ ফুট পর্যন্ত ক্যামেরা নামানো হলেও কিছু দেখা যায়নি। এখন পর্যন্ত ৪৫ ফুট পর্যন্ত নামতে পেরেছে ফায়ার সার্ভিস, তবে দেখা মেলেনি শিশুটির।
কীভাবে ঘটলো দুর্ঘটনা
গত বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে সাজিদ তার মায়ের সঙ্গে মাঠে যাওয়ার পথে খড়ের নিচে ঢাকা গভীর গর্তে পড়ে যায়। শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, হঠাৎ “মা” বলে ডাক শুনে পেছনে তাকিয়ে দেখেন, ছেলে গর্তের মধ্যে পড়ে চিৎকার করছে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সে আরও নিচে নেমে যায় এবং আর সাড়া পাওয়া যায় না।
গর্তটি কেন ছিল?
স্থানীয়রা জানান, কোয়েলহাট গ্রামের কছির উদ্দিন কয়েক মাস আগে তার জমিতে পানির স্তর পরীক্ষা করতে একটি গভীর গর্ত খনন করেন। পরে সেটি ভরাট করলেও বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে আবারও ফাঁপা জায়গা তৈরি হয়। সেই গর্তেই পড়ে যায় শিশুটি।
তানোর থানার ওসি শাহীনুজ্জামান জানান, উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে এবং খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর