ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা সেল কর্তৃক প্রচারিত একটি এআই জেনারেটেড ভুয়া ছবিকে সত্য ধরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা রুহুল কবির রিজভী অপতথ্য ছড়িয়েছেন—এমন অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি সাদিক কায়েম।
শনিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের একজন সিনিয়র নেতার কাছ থেকে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। যারা আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছেন, তারা যদি সংকটময় মুহূর্তে সত্য যাচাই না করে আওয়ামী লীগ–নির্ভর অপতথ্যকে ফ্যাক্ট হিসেবে গ্রহণ করেন, তাহলে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের সক্ষমতা নিয়ে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তৈরি হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির একটি সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী একটি ভুয়া ও এআই জেনারেটেড ছবির ওপর ভিত্তি করে দাবি করেছেন যে, হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির সঙ্গে তিনি একই টেবিলে বসে চা খেয়েছেন। এ ধরনের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেন ভিপি সাদিক কায়েক।
এ প্রসঙ্গে তিনি দল হিসেবে বিএনপি এবং ব্যক্তি হিসেবে রুহুল কবির রিজভীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি অপতথ্য ছড়ানোর দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
ভিপি সাদিক কায়েম আরও বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে অপতথ্য ছড়ানো শুধু ব্যক্তিগতভাবে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং তা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্যও মারাত্মক হুমকি। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত যেকোনো বক্তব্য দেওয়ার আগে সত্য যাচাই করা।
অন্যদিকে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ওই সমাবেশে বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা একটি সুপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ঘটনার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত ব্যক্তি ছাত্রলীগের নেতা এবং তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভিপির সঙ্গে একই টেবিলে চা খাচ্ছেন—এই বিষয়টির বিচার কে করবে?
রিজভী অভিযোগ করেন, ঘটনার এক-দুই ঘণ্টার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ‘গ্যাংস্টার’সহ নানা কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করা হয়। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার অর্থ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিজয়নগর, শান্তিনগর, শাহজাহানপুর ও খিলগাঁও এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা বসবাস করলেও তারা কখনো এ ধরনের হামলার শিকার হন না। তাহলে কেন বারবার নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে—এই প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা আব্বাসের রাজনৈতিক জীবন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কেউ কখনো অভিযোগ করতে পারেনি যে তিনি কাউকে মারধর করেছেন। বরং অসুস্থ ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নজির রয়েছে তার। এমন একজন মানুষ হঠাৎ করে একজন তরুণ প্রার্থীকে আঘাত করবেন—এটি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর