দীর্ঘ তিন মাস বন্ধ থাকার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি মূল্য পড়ছে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৩ টাকা।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ও বুধবার (১৭ ডিসেম্বর)—এই দুই দিনে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে মোট চারটি ট্রাকে ১২০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক ট্রাকে ৩০ মেট্রিক টন এবং সোমবার বিকেলে তিনটি ট্রাকে ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে আসে।
তিনি আরও জানান, ভারত থেকে আরও কয়েকটি পেঁয়াজবাহী ট্রাক পেট্রাপোল বন্দরে অপেক্ষায় রয়েছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করবে। পেঁয়াজের চালান দ্রুত খালাসের জন্য বন্দরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সোমবার বিকেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৯৮ থেকে ১০০ টাকায়। তবে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ খুবই কম। সমুদ্রপথে মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮২ থেকে ৮৩ টাকা, একই পথে পাকিস্তান থেকে আসা পেঁয়াজের দাম ৮০ থেকে ৮২ টাকা। পাইকারি বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানি পেঁয়াজ, যা ৮০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়া স্থলপথে মায়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা দরে এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ৯৮ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা দাম কমলেও এখনো ভালো মানের পেঁয়াজ ১০০ টাকার নিচে নামেনি।
খুচরা বাজারে বিক্রেতারা ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার ও মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ মিশিয়ে কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। ফলে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতাদের চাহিদা মূলত দেশীয় ও ভারতীয় পেঁয়াজের দিকে বেশি। কিন্তু এ দুই ধরনের পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম। অন্যদিকে পাকিস্তান, মিসর ও মায়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বেশি ব্যবহার হয় হোটেল-রেস্তোরাঁয়। ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যাপ্ত না হওয়ায় বাজারে দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে না।
আমদানি করা পেঁয়াজের ছাড়করণকারী প্রতিষ্ঠান রয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম রয়েল জানান, মেসার্স এইচ কে এ এন্টারপ্রাইজ (সাতক্ষীরা) ও মেসার্স সাবাহ এন্টারপ্রাইজ (যশোর) এসব পেঁয়াজ আমদানি করেছে।
এদিকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স কপোতাক্ষ সিএন্ডএফ এজেন্টের মালিক আবু নিদাল ফয়সল জানান, ভারত থেকে প্রতি টন পেঁয়াজ ৩০৫ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। বন্দর ও আমদানিসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক ব্যয় যোগ করে প্রতি কেজি পেঁয়াজের আমদানি মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। পরে পরিবহন ও শ্রমিক ব্যয় যুক্ত হলে বাজারজাত পর্যায়ে কেজিপ্রতি খরচ দাঁড়াবে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর