ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে দেওয়া পোস্ট তিনি লিখেছেন, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অকুতোভয় সৈনিক, জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা স্নেহের শরিফ ওসমান হাদি মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
‘সে ইনসাফ ও ন্যায়ের পথে দৃঢ়তা, ত্যাগ ও সাহসিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন। তার এই শাহাদাত পরিবার-পরিজন, সহকর্মী ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।’
তিনি আরও লিখেছেন, আমি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করছি—তিনি যেন তার প্রিয় এই গোলামকে জান্নাতুল ফিরদাউসের উঁচু মাকাম নসিব করেন। আল্লাহ তাআলা তাকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও দেশবাসীকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন উত্তম ধৈর্য্য ধারণের তাওফিক দান করুন। আমিন। ইনকিলাব জিন্দাবাদ।
এর আগে, জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারের সময় গত ২০ ডিসেম্বর দুপুরে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। গুলি মাথা ভেদ করে যাওয়ায় গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিউতে নেওয়া হয়। তিনদিন পর সোমবার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।সেখানে গত কয়েকদিন চিকিৎসা চললেও ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার আর উন্নতি হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ নামে একজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার সহযোগী আলমগীর শেখ মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন। এই দুজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। তাদের মধ্যে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগম (৬০), স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু রয়েছেন।
এ ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, মো. কবির, আব্দুল হান্নান, মো. হিরন, মো. রাজ্জাক, ফয়সালের বান্ধবী মারিয়া আক্তার এবং হালুয়াঘাট সীমান্তে মানব পাচারকারী হিসেবে পরিচিত সিমিরন দিও ও সঞ্জয় চিসিম।
উল্লেখ্য, গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক মাস আগেই হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন ওসমান হাদি। গত নভেম্বরে ফেসবুক দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাকে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
পোস্টে তিনি আরও লেখেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকেরা তাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাবেন না।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর