নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামে ধারণ করা একটি ১২ সেকেন্ডের ভিডিওকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর ভিডিওটি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি ব্যাপকভাবে নজরে আসে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণডহর এলাকার জামিয়া বদরুল হুদা খাতুনে জান্নাত মহিলা মাদ্রাসার সামনে স্কেটিং করতে করতে এক যুবক ভ্যানে চলাচলরত এক তরুণীকে উত্যক্ত করেন। একপর্যায়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা ব্যাগ দিয়ে আঘাত করা হলে ওই যুবক তাকে বিবস্ত্র করার চেষ্টা করেন। এমন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, ভিডিওটি মূলত গত ১৫ ডিসেম্বর ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আপলোড করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই ভিডিওটিকে অশালীন ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি কিছু মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার হুমকিও দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কেটিং করা যুবকের নাম রাকিব হাসান (২০)। ভ্যানগাড়িতে থাকা ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে নারী নন, তিনি একজন পুরুষ তার নাম হানিফ (২০)। ভিডিওটি ধারণ করেন রোমান মিয়া। হানিফ ও রোমান সম্পর্কে আপন দুই ভাই। তারা পূর্বধলা উপজেলার নারায়ণডহর গ্রামের ওয়াসিম মিয়ার ছেলে। দীর্ঘদিন ধরেই তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফানি ভিডিও’ তৈরি করে আসছিলেন।
ভিডিওটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে রাকিব হাসান নিজের ফেসবুক পেজে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ভাইরাল ভিডিওতে যাকে নারী মনে করা হয়েছে, তিনি আসলে পুরুষ এবং পরিকল্পিতভাবেই কনটেন্ট তৈরির জন্য নারী সাজানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ভিডিওটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হলেও এভাবে কনটেন্ট বানানো উচিত হয়নি।
রাকিব ওই ভিডিওতে নিজের ভুল স্বীকার করে বলেন, আমি বুঝতে পারিনি। ভিডিওটি আপলোড করার সময় কমেন্ট বক্সে উল্লেখ করেছিলাম এটি বিনোদনের জন্য এবং যাকে মেয়ে মনে হচ্ছে সে আসলে ছেলে। তারপরও আমার এমন কনটেন্ট বানানো উচিত হয়নি। আমি ভিডিওটি সম্পূর্ণভাবে ডিলিট করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ভিডিও করবো না। তিনি সবার কাছে ক্ষমাও চান।
এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ইসলাম জানান, বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভিডিওটিতে একজন পুরুষকে নারী সাজিয়ে কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত রাকিবের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর