ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর মৃত্যুতে সাতক্ষীরায় সর্বদলীয় ছাত্রদের উদ্যোগে গায়েবানা জানাজা ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের খুলনার মোড় সংলগ্ন আসিফ চত্ত্বরে এ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন সাতক্ষীরা শহর ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান।
জানাজা শেষে ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে বিক্ষোভ শুরু হয়ে মিছিলসহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের 'ভারতের আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ', 'আওয়ামী লীগের দালালের হুঁশিয়ার সাবধান, 'লাল জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার, 'আমরা সবাই হাদী হব, গুলির মুখে কথা কব' 'লীগ ধর জেলে ভর', স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সাতক্ষীরা শহর।
বিক্ষোভ পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম , শহর শিবিরের সেক্রেটারী মেহেদী হাসান, সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান, সমন্বয়ক আরাফাত হোসেন, নাজমুল হোসেন রনি প্রমুখ ।
প্রতিবাদ সভায় শহর শিবিরের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, আমরা যুগে যুগে দেখেছি ফ্যাসিবাদীরা গুপ্তভাবে হত্যা করে। যুগে যুগে যারা ফ্যাসিবাদ, জুলমবাজ এবং কালচারাল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, তখন সন্ত্রাসীরা তাদেরকে হত্যা করার জন্য নীল নকশা করেছে। হাদীকেও সেভাবেই হত্যা করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের পর অনেক জুলাই যোদ্ধা নৈতিকতা বিসর্জন দিলেও আমাদের নেতা হাদী তার নৈতিকতার সর্বোচ্চ স্থান ধরে রেখেছে।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলনে অগ্রভাগে থেকে যারা কাজ করেছে তাদের মধ্যে শরীফ ওসমান হাদী অন্যতম। মধ্যযুগীয় কায়দায় তাঁর মাথায় গুলি তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই ক্ষতি হয়তো বাংলাদেশ আর কখনো পূরণ করতে পারবে না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে যারা কাজ করবে তাদের পিছনে অন্যতম ভূমিকা পালনকারী হিসেবে থাকবে ওসমান হাদী। ওসমান হাদীর জনপ্রিয়তা যখন গ্রামে-গঞ্জে পৌঁছে যায়, তখন একটি পক্ষ তা মেনে নিতে পারেনি৷ ফ্যাসিবাদী খুনী হাসিনা ও ভারতের যৌথ পরিকল্পনায় এবং যারা ভারতীয় আধিপত্য কায়েম করতে চায়, তাদের নীলনকশায় তাকে শহীদ করা হয়েছে। আমরা আহ্বান জানাতে চাই, সরকার দ্রুত সময়ে মধ্যে যদি হত্যাকারীদের দ্রুত বের করতে না পারে তাহলে মসনদে বসে থাকার নৈতিক কোনো অধিকার নাই।
এদিকে শহরের খুলনা রোডের মোড়ে এনসিপির উদ্যোগে আরেকটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, এনসিপি সাতক্ষীরার প্রধান সমন্বয়ক কামরুজ্জামান বুলু, সাতক্ষীরা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি আরিফুর রহমান আলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখ সারির যোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম, জাতীয় যুবশক্তি সাতক্ষীরার আহবায়ক আবু সাইদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সালেহা আকতার, মেহজাবিন জুনা, রাদিত হাসান, রাকিব বিল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর