দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন। তার নিরাপদ আগমন নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকেও তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও সংবর্ধনা আয়োজন করা হবে।
সরকারের নিরাপত্তা প্রস্তুতি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, রাজধানীতে তারেক রহমানের নিরাপদ আগমন নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সম্পূর্ণ সতর্ক ও সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “সরকার জননিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. বাহারুল আলম বলেন, তারেক রহমান একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তার সুরক্ষায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমানের প্রাইভেট নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকবে।
ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তায় পর্যাপ্তসংখ্যক গোয়েন্দা পুলিশ ও সোয়াট টিম দায়িত্বে থাকবে।
তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়
নিরাপত্তার মূল পরিকল্পনায় বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— পুরো এলাকা সিসিটিভি ও ড্রোন নজরদারিতে রাখা, বিএনপির চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (CSF)-এর সঙ্গে সমন্বয়, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম, বিমানবন্দর ও সংবর্ধনা স্থলে সড়কপথে পুলিশের মোতায়েন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দর্শনার্থী প্রবেশ ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচল ও গুলশান পর্যন্ত পুরো রুট কঠোর নজরদারিতে থাকবে।
প্রত্যাবর্তন ও সংবর্ধনা
তারেক রহমান লন্ডন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে সকাল ১১:৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা শেষে তিনি সরাসরি সড়কপথে পূর্বাচলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, যেখানে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেবেন।
এরপর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাবেন। বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে প্রায় এক ঘণ্টা মায়ের পাশে অবস্থানের পর সন্ধ্যা নাগাদ তিনি গুলশান অ্যাভিনিউ ১৯৬ নম্বর ডুপ্লেক্স বাসায় পৌঁছাবেন।
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বুলেটপ্রুফ গাড়ি ও বাস ব্যবস্থা, তিন স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি **বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী CSF, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ও ড্রোন নজরদারি চালু, বিমানবন্দর, সড়কপথ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলে সোয়াট টিম ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন।
দলের পক্ষের প্রস্তুতি
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক টিম কাজ করবে। এছাড়া রাজধানীতে যে বড় ধরনের জনসমাগম হবে, তা শৃঙ্খলাবদ্ধ রাখতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ সময় পর তারেক রহমানের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর