বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনামঞ্চে পৌঁছেছেন। সেখানেই তাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। তার দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ইতোমধ্যেই সংবর্ধনাস্থলে জড়ো হয়েছেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।
এর আগে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পরে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান সরাসরি রাজধানীর পূর্বাচলে পৌঁছান। সকাল থেকেই এই স্থানে বিপুলসংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জড়ো হয়েছেন। তাদের অনেকেই গতকাল রাত থেকেই সেখানে আছেন। কেউ কেউ এলাকাভিত্তিক জটলা পাকিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, আবার কেউ সমবেতভাবে মিছিলে মুখর। এককথায় সবার মনেই উৎসবের আমেজ। এছাড়া স্লোগান-প্ল্যাকার্ড আর নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাসে পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। স্পিকারবাহী ট্রাকগুলোতে বাজছে দলীয় ও দেশাত্মবোধক গান।
এর আগে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। ঢাকায় অবতরণের আগে উড়োজাহাজটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা যাত্রা বিরতি করে।
ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তারেক রহমানকে স্বাগত জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পরে তাকে বরণ করেন তার শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। দেশের মাটিতের পা রাখার পর তিনিই প্রথম তারেক রহমানকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। পরে তারেক রহমান বিমানবন্দরে নেমে মুঠোফোনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বসে ফোনালাপে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ।
পরে বিমানবন্দর থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও প্রটোকলে বুলেটপ্রুফ বাসে করে তারেক রহমান পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকার মঞ্চে পৌঁছান। সেখানে তারেক রহমানের সঙ্গে মঞ্চে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি দীর্ঘ সময়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের যুগপৎ সঙ্গী শরিক দলের শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন। তবে, মঞ্চে শুধু মাত্র তারেক রহমানই বক্তব্য রাখবেন। মূলত এই মঞ্চে থেকেই প্রায় ১৮ বছর পর সশরীরে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান।
এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতোমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল থেকেই যৌথ বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে। গতকাল রাতে মঞ্চের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও টহল দিতে দেখা গেছে।
এছাড়া বুধবার সন্ধ্যা থেকেই পুরো বিমানবন্দর এলাকা কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢেকে দেয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় দুই হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সড়কে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন, আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ সেনাবাহিনী সদস্যদের।
এর পাশাপাশি নিরাপত্তা জোরদারে বিমানবন্দর, ৩০০ ফিট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি সদর দপ্তর। দেশে ফেরার পর তারেক রহমান যাতায়াতের সময় পুলিশি পাহারাসহ বিশেষ নিরাপত্তা পাবেন। এছাড়া তার বাসভবন ও অফিসেও থাকবে নিরাপত্তা। পোশাকধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা তারেক রহমানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর