তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও সূর্যের অনুপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ জেলায় জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শীতে সবার অবস্থা জুবুথুবু। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। যারা জরুরি প্রয়োজনে বের হচ্ছেন, তাদেরও কাঁপতে কাঁপতে চলাচল করতে হচ্ছে। হঠাৎ বেড়ে যাওয়া শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল মানুষরা। কনকনে ঠান্ডায় কাপড়ে জড়সড় হয়ে থাকা এই মানুষগুলোর কষ্ট লাঘবে মানবিক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে শীতার্ত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে শীতার্ত মানুষদের রক্ষা করতে সরকারের পক্ষ থেকে গরম কাপড় হিসেবে শতাধিক কম্বল বিতরণ করেন তিনি। শীতার্তদের গায়ে নিজ হাতে কম্বল জড়িয়ে দেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা।
এর আগে রাত ৮ টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। এসময় জেলা প্রশাসক এর সাথে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার ড এস এম ফরহাদ হোসেনসহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও পাগলা মসজিদের কতৃপক্ষ।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও মাতৃসদনে ভর্তি রোগীদের মাঝেও কম্বল বিতরণ করেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা বলেন, বিগত ৫ দিন যাবত হাওর অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ৫ দিন যাবতই শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। আমরা যারা বাসায় থেকে তীব্র শীত অনুভব করছি তাহলে বিভিন্ন স্থানে ছিন্নমূল মানুষরা যারা আছেন তাদের কাছে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। এ বিবেচনা করেই যেখানে ভাসমান মানুষ আছে সেখানে আমরা বিগত ৫ দিন যাবত কম্বল বিতরণ করছি। শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকলে এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুল হাসান মারুফ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুস সামাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
যদিও অল্প সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিলেছিল, তবে তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। সারাদিন সূর্য ঢাকা পড়ায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবী মানুষসহ সাধারণ জনগণ ঘরবন্দি থাকতে বাধ্য হন।
জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা আশা প্রকাশ করেন, শীতকালজুড়ে এই সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর