কোথাও আনুষ্ঠানিকভাবে শৈত্যপ্রবাহ শুরু না হলেও পৌষের মাঝামাঝিতে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় সারা দেশে জেঁকে বসেছে শীত। বিভিন্ন অঞ্চলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে। কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে দিনের বেলাতেও শীত অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন কুয়াশার দাপট অব্যাহত থাকতে পারে। একই সঙ্গে আগামী দুই দিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ৮ জানুয়ারি থেকে দেশের কিছু অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, “এই মুহূর্তে শৈত্যপ্রবাহ নেই। তবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকায় এবং কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা না মেলায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।”
তিনি জানান, সোমবার ভোরে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি। মাত্র ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি পার্থক্যের কারণে শীত বেশি অনুভূত হয়েছে। সাধারণত এই পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে নামলে শীতের অনুভূতি বাড়ে বলে জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘কনকনে’ শৈত্যপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা ‘কনকনে’ নামে কোনো শৈত্যপ্রবাহের কথা বলিনি। শীতের তীব্রতা বোঝাতেই কেউ কেউ এই শব্দ ব্যবহার করছেন।”
শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে শাহনাজ সুলতানা বলেন, “১ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাপমাত্রা খুব বেশি কমবে না। তবে ৬ জানুয়ারি থেকে কমতে শুরু করে ৮ জানুয়ারির দিকে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।”
গতকাল কিশোরগঞ্জের নিকলিতে দেশের সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত আকাশ আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং কিছু এলাকায় দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা বিরাজ করতে পারে।
এদিকে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন ও সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, সম্ভাব্য শৈত্যপ্রবাহ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি অথবা ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে। পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতেও শীতের তীব্রতা বেশি থাকতে পারে।
বরিশাল ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব তুলনামূলক কম হতে পারে। উপকূলীয় অঞ্চল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবান অঞ্চলে শীত থাকলেও শৈত্যপ্রবাহ ততটা প্রবল নাও হতে পারে।
বিডব্লিউওটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা, বগুড়া, নাটোর, নড়াইল, যশোর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাগুরা ও রাজবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এসব অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ তুলনামূলক আগে শুরু হতে পারে।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর