হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় যমুনা পাড়ের জেলা সিরাজগঞ্জে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। গত চার দিন ধরে জেলায় সূর্যের দেখা মেলেনি। শীতের তীব্রতায় সাধারণ মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটে জনসমাগম কমে গেছে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কৃষকরা ক্ষেতে কাজ করতে পারছেন না। তীব্র শীতে দিনমজুরদের কাজ না থাকায় তাঁরা আর্থিক সংকটে ভুগছেন। পেটের তাগিদে রিকশাচালকেরা গরম কাপড় জড়িয়ে রাস্তায় বেরোলেও তেমন যাত্রী পাচ্ছেন না। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।
অন্যদিকে, তীব্র শীতে সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলেও সরকার থেকে পর্যাপ্ত কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
রিকশাচালক আবুল হোসেন জানান, সকালে বের হয়ে সামান্য কিছু রোজগার হয়েছে। কিন্তু তীব্র শীতে আর কাজ করতে পারছেন না। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, তাই বাড়ির দিকে চলে যাচ্ছেন।
ট্রাকচালক মোক্তার হোসেন জানান, সন্ধ্যার আগেই মহাসড়ক কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে গাড়ি চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। বাজার স্টেশনের ছিন্নমূল বৃদ্ধ আলতাফ হোসেন ও আকাশী খাতুন জানান, তীব্র শীতে তাঁদের অবস্থা খুব খারাপ। কাগজের টুকরো ও ফেলে দেওয়া বস্তু জ্বালিয়ে কোনো রকমে শীত নিবারণ করছেন। সরকার থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কম্বল দেওয়া হয়নি।
সিরাজগঞ্জ বাঘাবাড়ী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়া অফিসার মোস্তফা কামাল জানান, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল বাছেত জানান, ইতোমধ্যে জেলায় প্রায় ২৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের কাছে আরও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে বিতরণ করা হবে। সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল আমিন জানান, এই শীতে যতদূর সম্ভব ঘর থেকে কম বের হতে হবে। বের হলে শীতের কাপড় পরতে হবে যাতে শরীর উষ্ণ থাকে। তা না হলে সর্দি-কাশি, হাঁপানি, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়তে পারে।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর