রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে যে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে চুয়াল্লিশ বছর আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জানাজা হয়েছিল, সেখানেই আজ শেষ বিদায় নিচ্ছেন তার স্ত্রী খালেদা জিয়া।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার মাঠ এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে জিয়া উদ্যানে তার স্বামীর কবরের পাশে শায়িত করা হবে।
খালেদা জিয়ার জানাজা উপলক্ষে আশেপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। জানাজায় অংশ নিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মানুষের ঢল নেমেছিলো। দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন তাদের নেত্রীকে বিদায় জানাতে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর ৬টায় মারা যান খালেদা জিয়া। তার মৃত্যুতে আজ বুধবার থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ে হয়।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমান ছিলেন ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার এবং জেড ফোর্সের অধিনায়ক। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য স্বাধীনতার পর তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। পরে নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে তিনি ক্ষমার শীর্ষে পৌঁছান।
তিনি রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।
বিমানে করে তার মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসার পর ২ জুন প্রেসিডেন্ট ভবনে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা হয়। তাকে দাফন করা হয় সংসদ ভবনের পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানে (এখনকার জিয়া উদ্যান)।
স্বামীর মৃত্যুর পর বিএনপির হাল ধরেন খালেদা জিয়া। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন ‘আপোসহীন নেত্রী’।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। খালেদা জিয়া হন বাংলাদেশের প্রথম এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন ৪১ বছর। তিনি পাঁচবারের সংসদ সদস্য, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী; আর বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন দুইবার।
তার চার দশকের রাজনৈতিক জীবনের বড় সময় কেটেছে রাজপথের আন্দোলনে। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন; তবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে কখনো তিনি হারেননি।
মাসুম/সাএ
সর্বশেষ খবর