কুমার পাড়ার পোড়া মাটির মিষ্টি গন্ধ

একসময় কুমার পাড়াগুলো মাটির কাঁচা গন্ধে থাকত মাতোয়ারা। ব্যাস্ত কুমাররা হিম-শিম খেতেন চাহিদা মেটাতে। হাট বাজারে মাটির তৈজসপত্রের পসরা সাঁজিয়ে বসতেন মৃৎ শিল্পিরা। নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু ছাড়াও শিশুদের খেলনা,সৌন্দর্য বর্ধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন বাহারি মাটির তৈজসে পূর্ণ থাকত কুমারপাড়া।
ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প নির্মম বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে এখনো কিছু জরাজীর্ণ কুমোর পরিবার ধরে রেখেছে বাপ দাদার পেশা। একদিন ছুটে গেলাম ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার কুমোড় পল্লিতে বিলুপ্ত প্রায় পোড়ামাটির মিষ্টি গন্ধ নিতে।
মৃৎ মানে মাটি, আর শিল্প মানে সুন্দর সৃষ্টিশীল বস্তু। তাই মাটি দিয়ে নিজ হাতে তৈরি শিল্পকর্মকে মৃৎশিল্প বলে। এই শিল্পটি হল বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও অন্যতম একটি শিল্প। মাটি দিয়ে তৈরি এই শিল্প কর্মের মধ্যে রয়েছে মাটির কলস, হাড়ি, সরা, বাসন, কোসন, পেয়ালা, সরাই মটকা, শালা, পিঠে তৈরির ছাচ ইত্যাদি। এই শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। আর এই শিল্পের প্রধান শিল্পী হলো আমাদের কুমোর সম্প্রদায়।
কিন্তু আজ গাঁয়ের কুমার পাড়ায় আর কাঁচা মাটির গন্ধ পাওয়া যায় না। আধুনিক সব প্রক্রিয়াজাত থালা বাসন আর প্রয়োজনীয় বস্তুতে হারিয়ে গেছে মাটির গন্ধ।
তবে আশার বাণী হচ্ছে, বর্তমানে মৃৎ শিল্পের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মানুষ শৌখিনতার জন্য মাটির তৈরি জিনিসপত্র ঘরের বিভিন্ন জায়গায় সাজিয়ে ঘরের শোভা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। এছাড়া বিভিন্ন অফিসে এর ব্যবহার ভালই লক্ষ্যনীয় বর্তমান সময়ে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্টান যেমন, আড়ং, ব্রাক, হ্যান্ডিক্রাফটস, কুমুদিনী, কারিকা, আইডিয়াস সহ অনেক প্রতিষ্টান তাদের নিজস্ব কামার দ্বারা নিত্যনতুন ডিজাইনের মাটির জিনিস বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করছে যা আমাদের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।
তবে কুমোর পাড়ার আশীষ কুমার বললেন, মাঝে অনেকদিন কম চললেও ইদানিং বিক্রি একটু বেড়েছে। লোকজন সৌখিন আসবাবপত্র হিসেবেই এটা এখন বেশি ব্যবহার করে। আমরা মাঝে মাঝে মেলায় বিভিন্ন আসবাবপত্র নিয়ে বসি। ক্রেতা আগের তুলনায় কম হলেও মোটামুটি ভালো আছে।
এব্যাপারে মৃৎশিল্পের উন্নয়নের খাতিরে সরকার এবং বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাগুলো বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহন করতে পারে। ভবিষ্যতে যেন এই শিল্প আর ধ্বংসের পথে ধাবিত না হয়, তাই সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক জেলায় জেলায় মৃৎ শিল্পের বাজার তৈরি করতে হবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা গ্রহন করে এর ব্যবহার সম্পর্কে উৎসাহিত করতে হবে। বর্তমানে মানুষ শৌখিনতার জন্য মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারের চাহিদা দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে। এখন নিত্যনতুন ডিজাইনের মাটির জিনিস বাজারে বিক্রির পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে যা আমাদের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে। তাই মৃৎশিল্প বিকাশে বিকাশে আরও সচেতনতা গ্রহন করতে হবে।
ছবি তুলেছেন ফটো সাংবাদিক আফরোজ জাহান প্রীতি
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: