রুহিয়া আজাদ মেলায় ফিরেছে স্বচ্ছলতা

প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:২০ পিএম

গত বছর আজাদ মেলায় এসেছিলাম। তখন মেলার পরিবেশ খুবই খারাপ ছিল। মেলায় পরিবার নিয়ে আসা যেত না। এমনকি যাত্রা পালার ভেতরেও ঢোকা যেত না। কারণ যাত্রার নামে তখন চলত অশ্লীলতা। কিন্তু এবার এর উল্টো পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যাত্রা পালায় নেই কোন অশ্লীলতা। সেখানে চলছে সামাজিক যাত্রাপালা। রুহিয়া আজাদ মেলা এখণ আগের মত নেই, এখানে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। এমন কথা বলছিলেন রুহিয়া ইউনিয়নের ঘনিমহেষপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম।

গত ১৪ নভেম্বর মাসব্যাপি ঐতিহ্যবাহী রুহিয়া আজাদ মেলা শুরু হয়। মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম কমিটির সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন। এসময় জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল ইসলাম, মেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জহুরুল ইসলাম সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৯৫৯ সালে সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নে আজাদ মেলার যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী রুহিয়া আজাদ মেলায় প্রায় ৩শ স্টল রয়েছে। যেখানে বিলুপ্ত নানান জিনিসপত্র এবং ছোটদের খেলার সামগ্রী, আসবাবপত্র সহ বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। এছাড়াও আনন্দ উপভোগের জন্য সামাজিক যাত্রাপালা, সার্কাস, সহ রয়েছে অনেক কিছু। মেলার চারপাশ নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে রেখেছে প্রশাসন। পুরো মেলা সিসি ক্যামেরার আওতায়।

রামনাথ এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে আমি আমার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মেলায় গিয়েছি। মেলার চারদিক ঘুরে দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে মেলায় এসে। কারণ মেলার পরিবেশ পাল্টে গেছে।

কুজিশহর গ্রামের কৃষক সেলিম হাসান বলেন, মেলায় ১০টাকা দিয়ে লটারীর টিকেট কেটেছিলাম। লটারীতে আমি একটি গরু পাই। এই গরু দিয়ে এখন চাষাবাদ করছি। মেলার ঐতিহ্যতা ফিরে এসেছে।

১০ শ্রেণির ছাত্র আলমগীর হোসেন বলেন, আমি সহ আমার ৮জন বন্ধু লটারীর টিকেট নেই। এরমধ্যে আমার এক বন্ধু লটারীর মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা পায়। অন্য এক বন্ধু একটি গরু পায়। কিন্তু আমার ভাগ্যে কিছু জোটেনি।

অভিভাক সামসুন নাহার বলেন, এক সময় ভয়ে পরিবার নিয়ে মেলায় আসতে পারতাম না। কারণ সেসময় চুরি, সংঘর্ষ সহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটত। কিন্তু এখন সেসব জিনিস নেই। মেলার স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে প্রশাসন।

ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার মেলায় প্রচুর মানুষের সমাগম হচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসা খুব ভাল হচ্ছে। এমনটি লাভবান হচ্ছেন বলে তিনি দাবী করেন।

মেলার সাধারণ সম্পাদক ঠাকুর চন্দ্র সেন বলেন, মেলায় যেন কোন ধরনের অশ্লীলতা না হয় সে লক্ষ্যে মেলা কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে আসার কারণে এবার মেলায় মানুষের ভিড় বেড়েছে। আগামীতেও এ ধরনের পরিবেশ থাকবে বলে তিনি আশা করেন।

রুহিয়া থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, পুরো মেলায় ৬টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। মেলায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ যেন মেলায় আসতে পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহাড়া দিচ্ছে।



বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: