ইতিহাস ও সৌন্দর্যের রুপসা জমিদার বাড়ী

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০১৭, ১২:১০ পিএম

শরীফ আহমেদ, চাঁদপুর থেকে :চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের পাশে রূপসা বাজারের পশ্চিম দক্ষিণ কোনে নজর দিলেই চোখে পড়বে জমিদার প্রাসাদ। পাশেই কারুকার্জ খচিত একটি মসজিদ। মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি কবরস্থান। এর প্রতিটি ফলকে লেখা রয়েছে চিরনিদ্রাায় শায়িত ব্যক্তিদের সুকর্মের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। পথ ধরে সামনে এগুলেই চোখে পড়বে ঘাঁট বাঁধানো দীঘি। বাড়িটির সামনে তাকালে নজরে পড়বে জমিদারবাড়ির ঐতিহ্য সেই কাছারি ঘর। প্রায় দু’শতাব্দির আগের কথা। আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে রূপসার জমিদারদের গোড়াপত্তন।

গ্রামের নাম রূপসা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুর্দীর্ঘ ঐতিহ্যই এ রূপের অহংকার। যখন এ অঞ্চলের বেশিরভাগ জনপদগুলো উন্নত সভ্যতার আলো দেখেনি।
চাঁদপুর জেলার সু-প্রাচীন জনপদ ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা গ্রাম তখনও সমৃদ্ধ ছিলো। সমৃদ্ধশালী এ গ্রামটির গৌরবময় ইতিহাসের সাথে জড়িত আছে এ গ্রামের ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।

ঊনিষ শতকের প্রথম ভাগে মোহাম্মদ গাজী এই জমিদার পরিবারের পত্তন করেন। সাধারণভাবে জমিদার বলতে সাধরাণ মানুষের মনে যে জমিদারের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠে সে রকম জমিদার ছিলেন না আহমেদ গাজী। তিনি মানুষের পাশে সব সময় ন্যাস্ত ছিলেন। জনকল্যাণ কাজের জন্য তিনি কৃষকদের জমি ওয়াক্ফ করেছেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি আমূল কাজ করেছেন।

তার মধ্যে রূপসা আহম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, রূপসা আহম্মদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, রূপসা স্কুল উল্লেখযোগ্য। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধর্মানুরাগী। ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে তিনি অকৃপণভাবে অনুদান দিতেন। রূপসার সু-প্রাচীন মসজিদ তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়াও তার জীবদ্দশায় তিনি আরো অনেকগুলি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।

ঐতিহাসিক স্থান চাঁদপুরের রূপসা জমিদার বাড়িতে সে জমিদারদের খাজনা আদায়ে অত্যাচার নির্যাতনের কোনো ভয়ঙ্কর স্মৃতি চিহ্ন নেই । তাইতো আজও সাধারণ মানুষের কাছে অনেক স্মরণীয় আর ভালবাসার স্থান হিসেবে রয়ে গেছে রূপসা জমিদার বাড়ি।

চাঁদপুর জেলার মেঘনা নদীর উত্তর পাড়ের ঐতিহ্যবাহী রূপসা জমিদার বাড়ির কথা। জমিদারের জমিদারি না থাকলেও এতটুকু সম্মান আর শ্রদ্ধার কোনো ঘাটতি হয়নি প্রজা প্রিয় জমিদারদের প্রতি সাধারণ মানুষের।

তাইতো এ এলাকার সাধারণ মানুষ আজো জমিদারদের পূণ্যময় কাজগুলোর প্রশংসা করতে ভুলেন না। জমিদারি প্রথা থাকাকালীন প্রজাদের খাজনার টাকায় ভোগ বিলাস না করে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অনেক কিছুই স্থাপন করে গেছেন জমিদাররা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: