প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানী ‘রাঙামাটি’

প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:৪০ পিএম

শহরের কালো ধোঁয়া থেকে দূরে চলে গিয়ে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিতে ঘুরে আসতে পারেন রাঙ্গামাটি। এই গরমের মাঝেও যদি কুয়াশা দেখতে চান তাহলে ভোঁর ৫টায় চোখ মেলে আকাশ পানে তাকাতে হবে আপনাকে। আবার ৮টার পর থেকেই রোঁদের প্রতাপ বাড়তে থাকে শহরের থেকে বেশি।

প্রকৃতি যেন বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকে রাঙামাটিতে। সেখানে প্রধান যানবাহন হল সিএনজি। ঢাকা শহরে বাস যেমন লোকাল চলে, সেখানে সিএনজিও লোকালভাবে যাত্রী নেয়। একেক স্টপেজ পাড় করতে গেলে ১০টাকা করে ভাড়া গুণতে হবে আপনার। সিএনজি বসে বসে পাহাড়ের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ না হবার কোন উপায় নেই। তবে যেসব স্থান অবশ্যই ঘুরে আসবেন তার সংক্ষিপ্ত তালিকা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিলাম-

&dquote;&dquote;

রাঙামাটি মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু : রাঙামাটি শহরের শেষপ্রান্তে হ্রদের ওপর গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন মোটেল পেরুলেই ঝুলন্ত সেতু। ঝুলন্ত সেতুতে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে দৃশ্যমান লেকের অবারিত জলরাশি ও দূরের উঁচু-নিচু পাহাড়ের আকাশছোঁয়া বৃক্ষরাজি। পর্যটন কর্পোরেশন ১৯৭৮ সালে মূল মোটেলটি নির্মাণ করে। ’৮৬ সালে মোটেলের আধুনিক অডিটোরিয়াম ও ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করেন। ঝুলন্ত সেতুটি ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ, ৮ ফুট প্রশস্ত এবং উভয় পাশে টানা তার দ্বারা বেষ্টিত। সেতুটির কারণেই মোটেলের গুরুত্ব ও আকর্ষণ অনেকগুণ বেড়ে গেছে। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে সেতুটি ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ হিসেবে রূপ নিয়েছে। এখানে আরও রয়েছে কটেজ, পার্ক, পিকনিট স্পট, স্পিড বোট ও সাম্পান টাইপের নৌযান।

রাজবন বিহার : পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় তীর্থস্থান রাঙামাটির ঐতিহ্যবাহী রাজবন বিহার। চাকমারা অবশ্য বিহার বা মন্দিরকে কিয়াং বলে থাকে। এটি মূলত আমাদের দেশের একটি প্রধানতম বৌদ্ধবিহার হিসেবে পরিচিত। রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের রাজবাড়ির পাশেই এর অবস্থান। ১৯৭৬ সালে রাজবন বিহার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সর্বজন শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থাবির (বনভান্তে) অধ্যক্ষরূপে বিরাজিত। ৩৩.৫ একর বিস্তৃত বিহার এলাকায় ৪টি মন্দির, ভিক্ষুদের ভাবনা কেন্দ্র, বেইনঘর, তাবতিংশ স্বর্গ, বিশ্রামাগার ও হাসপাতাল রয়েছে। প্রতিবছর বিহারে কঠিন চিবরদান অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে যা দেশের আর কোন বৌদ্ধধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিরল।

শুভলং জলপ্রপাত : রাঙামাটির শুভলং জলপ্রপাত সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব সৃষ্টি। পাহাড়ি ঝরনার শীতল জলধারা শুধু মনুষ্যকুলকে কেন পাখি কুলকেও দুর্বিনীত আকর্ষণে আকর্ষিত করে। শুভলং ঝরনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব নৈসর্গিক সৃষ্টি। শুভলং ঝরনা ৩০০ ফুট উঁচু থেকে বর্ষাকালে জল ধারার অবিরাম পতনে সৃষ্ট ধ্বনিসমেত। শুভলং ঝরনা রাঙামাটির বরকল উপজেলায় অবস্থিত। কালিট্যাং তুগ এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। যার উচ্চতা প্রায় ১৮৭০ ফুট। 

&dquote;&dquote;

এই শৃঙ্গের পাদমূলে বরকল উপজেলা কমপ্লেক্স অবস্থিত। এই পর্বতশৃঙ্গ হতে রাঙামাটি জেলা সদর এবং ভারতের মিজোরাম রাজ্যটি দৃষ্টিগোচর হয়। শুভলং ঝরণা ভিজিট করতে হলে রাঙামাটি সদরের তবলছুড়ি বাজার থেকে নৌযানে ২ ঘণ্টায় সরাসরি শুভলং যেতে পারেন।

রাঙামাটি গেলে অবশ্যই এই কয়েকটি স্থান ঘুরে আসুন। সারাজীবন এই স্মৃতি আপনাকে আনন্দ দিবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: