আ’লীগের প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনা করলো বিএনপি

প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৭, ১২:৪০ পিএম

নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ যে ১১ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে তা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের এতো ভয় ও শঙ্কা যার ফলে নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগ যে ১১ দফা প্রস্তাব পেশ করেছে তা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কিভাবে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিভাবে ভোটের ফল পাল্টে দেয়া যায় সেই কৌশল আছে ঐসব প্রস্তাবনায় যা সম্পূর্ণরুপে জনমতের বিপরীত।

তিনি বলেন, সবাই চায় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সেনাবাহিনী মোতায়েন। কিন্তু আওয়ামী লীগ চায় সেনাবাহিনী ঠুটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকুক, সেই কারণে তারা সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিতে চায় না। বিগত আওয়ামী শাসনামলে অনেক দলীয় ক্যাডারের লাইসেন্স ও বিনা লাইসেন্সে অস্ত্র দেয়া হয়েছে। এখন ভোট গ্রহণের দিন আওয়ামী লীগের অনুকূলে সন্ত্রাসী কায়দায় ব্যালট বাক্স ভর্তি করতে সেই অস্ত্রগুলোই ব্যবহার হবে। সুতরাং সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা না দিলে ভোট-সন্ত্রাস রোধ করা যাবে না।

আমি আবারো পুনরাবৃত্তি করছি যে, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে প্রধান বাধা। জনগণের দাবি-নির্দলীয় নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার। এর বিরোধীতা করে ক্ষমতাসীন দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনগণের কাছে শুভবার্তা দেয়নি। যাইহোক, আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠিত বৈঠকে বক্তব্যে তাদের দাবি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছে, এটি আওয়ামী লীগের বিষয়। এখন নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক, প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।

জনমতকে অগ্রাহ্য করে দলীয় সরকারের অধীন ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার আয়োজন চালালে তা হবে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, দেশে অন্ধকার নেমে আসবে। জনগণ চায়-নির্বাচন কমিশন যেন আওয়ামী লীগের আয়ত্ত্বশাসনের মধ্যে বন্দি হয়ে না পড়ে। তারা যেন তাদের সাংবিধানিক স্বায়ত্বশাসন প্রয়োগ করে সহায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে চলেছে বেপরোয়া লুটপাট উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করেছে, যেভাবে মানুষের সম্পদ জোরপূর্বক লুণ্ঠন করেছে, যেভাবে উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে, মন্ত্রীদের কথায় সেটির কিঞ্চিৎ ফুটে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত ১৮ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের যে ব্যাপক ঢল নেমেছিল তা ঐতিহাসিক। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি গণমাধ্যমের সকল সাংবাদিক ভাই-বোন যারা কষ্ট স্বীকার করে অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের খবর প্রচার ও প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু জনতার ব্যাপক ঢলে সরকার মনোকষ্টে প্রতিহিংসার আশ্রয় নেয়। প্রিয় নেত্রীকে একনজর দেখার জন্য অপেক্ষারত লাখ লাখ জনতাকে বিভ্রান্ত ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ীবহর যাতে ঠিক মতো অগ্রসর হতে না পারে সেজন্য আকস্মিকভাবে রাস্তার দু’ধারের সকল বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দেয়া হয়। এটি সরকারের হুকুমেই সংঘটিত হয়েছে। এটি সরকারের বাধ্য সংকীর্ণতার ঘৃণা প্রকাশ বলেও দাবি করেন তিনি।


বিডি২৪লাইভ/এএইচআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: