হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প

তালতলী উপজেলার রাখাইন পল্লীতে বিলুপ্তির পথে তাঁত শিল্প। মানবেতর জীবন পার করছে এখানকার তাঁত শিল্পীরা। এসব রাখাইন পল্লীতে এক সময় যাওয়ার পথে অনেকটা দূর থেকেই তাঁতের ঠক ঠক আওয়াজ শুনতে পাওয়া যেত। দিন-রাত তাঁতীদের কর্মব্যস্ততায় গমগম করতে রাখাইন পাড়া। এখন আর নেই সেই কর্মচাঞ্চল্য, কমে এসেছে ঠক ঠক শব্দ । তবে তাঁতী বাড়ীতে গেলে দেখা যায়: রং-বেরঙের সুতা, কাপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। তবে এখন আর এই রঙিন সুতার রঙিন স্বপ্ন বোনে না তাঁতীরা।
একদিকে যেমন সুতার তীব্র সংকট, অন্যদিকে সুতার মাত্রাতিরিক্ত দাম, পাচ্ছে না সরকারি কোন সহায়তা, পণ্য বিক্রির পরিবেশ না থাকাসহ নানা সমস্যায় স্থবির হয়ে আছে তালতলীর তাঁত শিল্প। এসব সমস্যা সুষ্ঠু সমাধান না হলে রাখাইন তাঁতের অস্তিত্ব বিলীন হবে দাবি রাখাইনদের।
অন্যদিকে পণ্য বিক্রির স্থান না থাকায় রাখাইন যারা তাঁতের কাপড় বুনছে তারা পড়েছে চরম বিপাকে। নামিশেপাড়ার মিসসে মায়া রাখাইন বলেন, আমি “মহিলা উন্নয়ন কেন্দ্র” নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলি। ২০০১ সালে বরগুনা মহিলা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন লাভ করে এ প্রতিষ্ঠান। উক্ত সংগঠনের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি আমি। নারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য নারী নির্যাতন, নারী ও শিশু পাচার, যৌতুক প্রথা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদক নির্মূল ও রাখাইন শিশুদের মাতৃভাষা শিক্ষা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এ প্রতিষ্ঠানটি। রাখাইনদের বিলুপ্তির ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পকে পুর্নজীবিত করার জন্য সরকারি-বেসকারি সংস্থাদের সাথে যোগাযোগের অব্যাহত রয়েছে আমাদের। আমি সংগঠনের পাশাপাশি তাঁতের কাজ করি। আমাদের বোনা কাপড়গুলোর মধ্যে শীতকালীন কাপড় বেশি। তাই এ কাপড়গুলো শীত প্রধান দেশে বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে আমরা সারা বছর কাপড় বুনতে পারতাম।
একই পাড়ার রাখাইন তাঁতী মিসেস মাতংচিং বলেন, গত বছর যে কাপড় বুনেছি তা এখনো বিক্রি হয়নি। তাঁতের কাপড় বোনার প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকলেও কাপড় বুনছেন না অনেকেই। যে দুই একটি বাড়িতে কাপড় বুনা হয় তারা বলেছেন, সুতার তীব্র সংকট এবং সুতার দাম বাড়ায় তারাও পড়েছেন সমস্যায়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে অন্যদের মতো তাদেরও বন্ধ করে দিতে হবে তাঁতের কাপড় বোনা।
রাখাইন তাঁতী মিস চোনে রাখাইন, মিসেস মাহানচিং, মিসেস মাচান আরো অনেকে জানান, মুনাফা কমে যাওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কেউ তাঁতের পেশায় আসতে চায় না, অভিভাবকরাও চান না অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এই কাজে জড়িয়ে পড়ুক ছেলে-মেয়েরা।
বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের পটুয়াখালী জেলার লিয়াজোঁ অফিসার মোঃ রাজিবুল ইসলাম বিডি২৪লাইভকে জানান, রাখাইন তাঁতীদের জন্য ঋণ সুবিধা এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা উধর্তন কর্মকর্তার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়ছে। অতিশীঘ্রই অনুমোদন হয়ে আসবে।
তালতলী উপজেলা তাঁতী লীগের আহবায়ক মি: মংচিন থান বিডি২৪লাইভকে বলেন, এ শিল্পকে রক্ষা করতে হলে কাপড় বিক্রির আলাদা মাকের্ট, দাতা সংস্থার সহায়তা, সুতার সহজ প্রাপ্তি, সুতার দাম কমানো, আধুনিক প্রশিক্ষণ, কাপড়ের ভিন্ন ব্যবহার কৌশল প্রশিক্ষণ, সরকারি বিনিয়োগ দরকার।
বিডি২৪লাইভ/এইচকে
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: