সাক্ষাৎকার দিতে এসে ৯ শিক্ষার্থী কারাগারে

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৭, ০৯:২৩ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার সাক্ষাৎকার দিতে এসে জালিয়াতির অভিযোগে দুই দিনে
কারাগারে গেলেন নয় জন শিক্ষার্থী।

রবিবার (১২ নভেম্বর) প্রথম দিনের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের সময় ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে উল্লেখিত বাংলা ও ইংরেজি বাক্য লেখার সাথে গড়মিল পায় দায়িত্বরত শিক্ষক। ফলে মাহবুব হোসেন, ইমাম হোসেন, অমিত হাসান ও আশিকুল হাসান রবিন নামে চার শিক্ষার্থী এবং সোমবার (১৩ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিনে একই অভিযোগে আশরাফুজ্জামান, মাহমুদুর রশীদ সৌরভ, নাইমুর রহমান, নিশাদ আহমেদ নামের চার ভর্তিচ্ছুসহ মোট পাঁচ জনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জালিয়াতির অভিযোগ স্বীকার করলে সন্ধ্যায় তাদের আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না পাওয়া গেলেও অভিযুক্তদের সাথে থাকায় সন্দেহভাজন হিসেবে মো: রেজওয়ানকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।

প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, রবিবার আদমদিঘি উপজেলার তহিদুল ইসলামের ছেলে মাহবুব হোসেন সনদ নামে ভর্তি জালিয়াতি চক্রের এক সদস্যের সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকা চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী মাহবুবের পরিবর্তে সনদ পরীক্ষা দিলে মাহবুব ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৫৩০৯৪২।
&dquote;&dquote;
ইমাম হোসেন ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার হাফেজ আব্দুল মান্নানের ছেলে। ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত নামের এক শিক্ষার্থী তার হয়ে প্রক্সি দিলে সে ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) ৩য় স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৬৩৭৩৪৪।

অমিত হাসান ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের হারেছ মিয়ার ছেলে। তার পরীক্ষাও ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে সনেট নামের জালিয়াতি চক্রের এক সদস্যে দিয়ে দেয়। এতে সে ‘এইচ’ (আইআইটি) ইউনিটে ১১তম স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৮১২৬৮৬।

অন্যদিকে আশিকুল হাসান রবিন কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার আবুল কালাম আজাদের ছেলে ‘এফ’ (আইন ও বিচার অনুষদ) ইউনিটে ১৬তম স্থান লাভ করেন। উত্তরপত্রের লেখার সঙ্গে তার হাতের লেখার মিল না পাওয়ায় তাকে আটক করা হয়।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) আটককৃতদের প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা প্রক্সির মাধ্যমে উত্তীর্ণ হওয়ার কথা স্বীকার করেন। এদের মধ্যে আশরাফুজ্জামান ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ‘সি’ ইউনিটে (রোল নং-৩৪২৪৭৩) প্রক্সির মাধ্যমে ১৭তম হয়। আরেক আটককৃত মাহমুদুর রশীদ সৌরভ ৫লাখ টাকার বিনিময় ‘ই-ইউনিটে’ (রোল-৫২৩২৫৩) প্রক্সির মাধ্যমে ১৫২তম হন। এছাড়া নাইমুর রহমান ২লাখ টাকা চুক্তিতে ‘ই-ইউনিটে’ রোল-৫২৬০৯৮) প্রক্সির মাধ্যমে ১২৭ তম হওয়ার কথা স্বীকার করে। অন্যদিকে নিশাদ আহমেদ ‘এফ-ইউনিটে’ রোল নং-৬৩২১৩৬) প্রক্সি সহায়তা নিয়ে ৪৭তম অবস্থান করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভর্তি জালিয়াতির কথা স্বীকার করায় তাদেরকে আশুলিয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো: নয়ন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী তাদের আটক করা হয়েছে। থানায় নিয়ে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: