‘এটা শুধু ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়’ 

প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ০৫:১০ পিএম

বর্তমান ছাত্র আন্দোলন আসলে ছাত্র আন্দোলন না। বর্তমানে ছাত্র আন্দোলনকে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক নামধারী ছাত্রনেতা ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মানুষ খুন, নিজেদের মধ্যে মারামারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে, তাছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছেন টকশো’তে আমন্ত্রিত অতিথিরা।

রবিবার (৭ জানুয়ারি) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোর ‘মুক্তমঞ্চ’ টক শো’তে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এ এসব কথা বলেন।

টক শো’র আলোচনার বিষয় ছিলো ‘ছাত্র রাজনীতি ও ভবিষ্যত নেতৃত্ব’। এই টক শো’তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার। উপস্থাপনায় ছিলেন নাজনীন নাসির দোলা।

দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘আমি পুরানো ছাত্র আন্দোলনের মানুষ। এখন যা ঘটছে এটাকে আমি ছাত্র আন্দোলন মনে করি না। এটা আসলে ছাত্র আন্দোলন হচ্ছে না। এখন যেটা হচ্ছে, ছাত্র আন্দোলনকে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক নামধারী ছাত্রনেতা ব্যবসা, বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মানুষ খুন, নিজেদের মধ্যে মারামারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, অপরাধে আটক হওয়া আসামীদের জন্য থানা ঘেরাও। এটা শুধু ছাত্রলীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এর আগে যে ক্ষমতায় ছিলো বিএনপি। তাদের যে ছাত্র সংগঠন আছে তাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ছাত্র আন্দোলনটা এখন আর ছাত্র আন্দোলন নেই।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ৭০ বছরের একটি সংগঠনের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। স্বাধীনতার আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা বলে শেষ করা যাবে না। রোহিঙ্গাদের পাশে যখন মানবতার সেবা নিয়ে যায় তখন কিন্তু খুব বেশি আমরা গণমাধ্যমে দেখি না। ছাত্র রাজনীতি এই দেশের রাজনীতির পথ দেখিয়েছে। ১৯৯১ সালের পর থেকে নির্বাচিত কোনো ছাত্র সংসদ নাই। গত বছর কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে জেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ নেতাকর্মী বহিস্কার হয়েছে। বহিস্কার করার পরে তারা ছাত্র সংগঠনে থাকছে কী না এটা আবার প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।

বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি করছি। আমি মনে করি, আমাদের কাছ থেকেও বর্তমান যারা ছাত্র রাজনীতি করেন তারা খুবই ট্যালেন্ট। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতি ছাত্র রাজনীতির পটভূমিকায় তৈরী হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো বিপদ আসলে ছাত্ররাই প্রথম এগিয়ে আসে। আগে যারা ছাত্রদল করতেন তারা মাষ্টার পাশ করার পর সভাপতি হয়েছে। পাশ করার আগে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেনি। আর মাধ্যমিক স্তরে কোনো ছাত্র রাজনীতির কমিটি নাই। বাংলাদেশর ছাত্র রাজনীতির বিশ্বের মডেল হতে পারে। বর্তমান অবস্থা হলো যে, সরকার যদি অন্যান্য ছাত্র সংগঠনকে কাজ করতে না দেয় তাহলে একটি সংগঠনে আধীনে খুব খারাপ অবস্থা হয়। বর্তমান সে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যা আমরা সবাই দেখতে পারছি।

সাংবাদিক আশরাফ কায়সার বলেন, বর্তমানের ছাত্র রাজনীতি না থাকলে কারো কোনো ক্ষতি হবে না। আওয়ামী লীগের যে ইমেজ তা ছাত্রলীগ ডেমেজ করে। বিএনপি যখন ক্ষমতা থাকে তখন আমরা ছাত্রদলের চেহারা দেখতে পাই। কী করেছে তা আমরা জানি। ভবিষ্যতে যে করবে না এখন বলা যাবে না। আজকে ছাত্রলীগের ক্যাম্পাসে যে মারিমারি, সংঘর্ষ দেখতে পাই, বিএনপির সময় একই চিত্র দেখেছি। 

বিডি২৪লাইভ/এসআই/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: