নেইমারের দলবদলে বাবার আগ্রহ কেন?

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৮, ১১:১৩ এএম

নেইমার দা সিল্ভা স্যান্তোস জুনিয়র। যিনি নেইমার নামেই বেশি পরিচিত, একজন ব্রাজিলীয় পেশাদার ফুটবলার, যিনি ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন এবং ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে একজন ফরোয়ার্ড বা উইঙ্গার হিসেবে খেলেন। তাঁকে আধুনিক বিশ্বের উদীয়মান ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম মনে করা হয়। এবার ব্রাজিলের সাবেক তারকা খেলোয়ার রোনালদোর পথেই হাটছেন নেইমার।

নেইমার বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার আগেই রিয়ালে যেতে চান। এটাই নাকি তাঁর আসল গন্তব্য। ক্লাব সভাপতি নাসের আল খেলাইফি বলেছেন। বলেছেন নেইমারও। তবু নতুন করে গুঞ্জনটা উঠল। পরের মৌসুম নয়, এই মৌসুমেই রিয়াল মাদ্রিদে যেতে চান নেইমার। বিশ্বকাপ ফাইনালের আগেই এই দল বদল চূড়ান্ত করতে চান তিনি। এমন খবর দিয়েছে গোল ডটকম।

যদিও নেইমারের আসল গন্তব্য ছিল রিয়ালই, পিএসজি নয়। সরাসরি বার্সেলোনা থেকে রিয়ালে গেলে এর প্রতিক্রিয়া হতো ভয়াবহ। সেটির মাত্রা কমাতেই নেইমার নাকি একটু ঘুরপথে রিয়ালে আসতে চান।

নেইমারের এই চাওয়ার কথা ভালো করে জানেন তাঁর এজেন্ট পিনি জাহাভি। জাহাভি এরই মধ্যে রিয়াল সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন। গত ১৩ মে দুজনের বৈঠক হয়েছে। এরপর দিন নেইমারের আইনজীবী ও তাঁর বাবার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে জাহাভির। নেইমারের বাবাই নাকি এই দলবদলে বেশি আগ্রহী। এর একটা কারণ হতে পারে, আরও একটি দলবদল মানে নেইমারের বাবার ব্যাংক হিসাবে আরও বড় অঙ্কের কমিশন যোগ হওয়া। রিয়ালে যদি যেতেই হয়, দেরি কেন!

রিয়ালে যাওয়া নিয়ে মেসি যদিও বলেছেন, নেইমারকে রিয়ালের জার্সি পরে খেলতে দেখা তাঁর জন্য হবে ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতা। কিন্তু বিষয়টি নতুনও নয়। ব্রাজিল কিংবদন্তি রোনালদোও এমন ঘুরপথে বার্সা থেকে রিয়ালে নাম লিখিয়েছিলেন। সেই পথ অনুসরণ করতে চান নেইমার।

গত মৌসুমের আগে বার্সেলোনা থেকে ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত দলবদলের ঘটনা জন্ম দিয়ে বার্সেলোনা থেকে নেইমারকে নিয়ে আসে পিএসজি। নেইমারের বাই আউট ক্লজের ২০০ মিলিয়ন ইউরোর পুরোটাই পরিশোধ করে দেয় তারা। ফ্রান্সের ফুটবলে বাই আউট ক্লজ নেই। নেইমার পিএসজির অনুমতি ছাড়া ক্লাব ছাড়তে চাইলে সেটি হবে চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু কোনো খেলোয়াড়কে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করেও আটকে রাখা যায় না। এতে তার কাছ থেকে ক্লাব শতভাগ পায় না।

জাহাভি পিএসজিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে রবার্ট লেভানডফস্কিকে এনে দেবেন বলে কথা দিয়েছেন। পিএসজি অবশ্য যেকোনো অবস্থায় ২০২২ পর্যন্ত নেইমারকে ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। অন্তত নেইমারকে এই মৌসুমে চায় পিএসজি। ক্লাবের চেয়ারম্যান খেলাইফি এর আগে জোর গলায় বলেছেন নেইমার প্যারিসে থাকছেন এটি ২০০০ শতাংশ নিশ্চিত।

এমনিতেই নেইমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, নেইমার নিজের জন্য খেলেন নাকি ক্লাবের জন্য। পিএসজিকে এখনো নিজের রক্তের সঙ্গে নেইমার মিশিয়ে নিতে পারেননি। ক্লাবের লিগ শিরোপা জয়ের উৎসবেও তাঁকে যোগ দিতে দেখা যায়নি। নেইমার অবশ্য তখন ব্রাজিলে নিজের পুনর্বাসনে ছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড় ক্রিস্তোফে দুগারে অভিযোগ করেছেন, নেইমার ক্লাবের মুখে থুতু দিয়েছেন।

নেইমার সান্তসে (ব্রাজিলীয় ক্লাব) যোগ দেন ২০০৩-এ। বিভিন্ন মর্যাদাক্রম অতিক্রম করে তিনি মূলদলে নিজের যায়গা করে নেন। তিনি সান্তসের হয়ে প্রথম আবির্ভাব করেন ২০০৯ সালে। ২০০৯ সালে তিনি কম্পেনাতো পুলিস্তার শ্রেষ্ঠ যুবা খেলোয়ার নির্বাচিত হন।

পরবর্তীতে সান্তসের ২০১০ কম্পেনাতো পুলিস্তা জয়, নেইমারের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া এবং ২০১০ কোপা দো ব্রাজিলে ১১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা পুরষ্কার পান। তিনি ২০১০ সাল শেষ করেন ৬০ খেলায় ৪২ গোল করার মাধ্যমে। নেইমার ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ১৭, অনূর্ধ্ব ২০ এবং ব্রাজিল মূল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বিডি২৪লাইভ/এমআরএম

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: