নদীর পানিতে ভেসে গেল ঈদ আনন্দ!
আইলার বানে ভেসে যাওয়া মানুষগুলো নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল কিন্তু সেটা ছিল শুধুই দুঃসপ্ন। আইলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনিসহ খুলনার অনেক অঞ্চলের জনবসতি। ভেসে যায় তাদের বাড়িঘর, ক্ষেতখামার, হাজার হাজার একর মাছের ঘের। দীর্ঘ বছর পর সে বিপর্যয় কাটিয়ে এই মানুষগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। আগের মত স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছিল সে সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো।
কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) দুপুরে সব সে বেঁচে থাকার স্বপ্নগুলোকে আবার নদীর জ্বলে ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হল জেলার আশাশুনি উপজেলায় পাঁচ গ্রামের জনবসতি। স্থানীয় খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবনের ফলে ভেসে গেছে অসংখ্য মৎস্য ঘের, ধসে পড়েছে বহু কাঁচা ঘর-বাড়ি। সর্বশেষ পাঁচটি গ্রাম ছাড়িয়ে ছয়টি গ্রামে প্রবেশ করেছে প্লাবনের পানি। স্থানীয় বিছট জামে মসজিদ বর্তমানে নদীর মধ্যে।
মাত্র একটি দিন পরেই মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। কিন্তু প্লাবিত হওয়া এলাকার এসব মানুষের মনে উৎসবের এই আগাম বার্তা কোন সাড়া জাগাতে পারেনি। বরং কয়েক মুহুর্তে নদীর পানি তছনছ করে দিল চোখের পলকে মিলানো জনবসতি। হয়তো অনাহারে বা অর্ধাহারে দুর্গত এলাকার কোর একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত হয়ে নীরব আয়োজনে কেটে যাবে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
সরোজমিন গিয়ে দেখা মিলেছে করুণ চিত্রের, হু হু করে মুহুত্বেই ভরে গেছে পাঁচটি গ্রাম। পাঁচটি গ্রাম পানিতে ভাসছে। একাকার হয়ে গেছে শত শত বিঘা চিংড়ী ঘের। নতুন করে এত সহজেই এমন বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে সেটা এলাকাবাসীর কল্পনারও অতীতে ছিল।
স্থানীয় নুরুল নামের এক ব্যক্তি জানান, ঈদের মুখোমুখি নদীর প্লাবনের পানি সবকিছু নিয়ে ভাসিয়ে চলে গেল। এবারের ঈদ আনন্দ হয়তো আর পালন করা হল না কারও। ঈদের আনন্দটুকুও নদীর পানিতে ভেসে চলে গেল। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এখন সংশয়ের মধ্যে সবাই। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে মুহুর্তেই। গরু, হাঁস, মুরগী পানির উপরে ভাসছে। নিরাপদ আশ্রায় নেওয়ার মত জায়গার বড়ই অভাব।
ভুক্তভোগী একাবাসীর অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতৃপক্ষকে বারবার বলা হলেও তারা জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এখন পানিতে ভেসে মরতে হবে সকলকেই।
অন্যদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মশিউল আবেদীনের দাবী, ইতিমধ্যে বাঁধভাঙা হওয়া এলাকায় সংস্কারে জন্য কাজ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে, জোয়ারের উচ্চ পানি চাপের ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
আইলার মত বৃহৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষত-বিক্ষত এ সব মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখার মুহুর্তেই নতুন বিপর্যয় তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিল। প্লাবনের জলে ক্ষতিগ্রস্ত এ সব পরিবারগুলো যে মুহূর্তেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করবে সে মুহূর্তে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণান্ত চেষ্টায় বিভোর। তাই এবারের ঈদ এই বানভাসি মানুষদের জীবনে খুশি বয়ে আনতে পারলো না।
বিডি২৪লাইভ/এমআরএম
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: