যমুনায় বিলীন হচ্ছে বসত বাড়ি, দেখার কেউ নেই!

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০১৮, ০৩:৪৬ পিএম

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত আরো ১১টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এদিকে জনপ্রতিনিধি ও পাউবো’র কর্মকর্তারা ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটানো নদী পাড়ের বাসিন্দাদের।

সরেজমিন জানা গেছে, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপতাল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে যমুনার তীব্র ভাঙন। প্রতিনিয়তই নদীর পেটে যাচ্ছে বসত বাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দোকানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মনগ্রাম ও আড়কান্দি চরে গিয়ে দেখা গেছে- শাহজাহান আলী, ওসমান গণি, নজরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও আকলিমা খাতুনের বসতবাড়িতে যমুনার হিংস্রতা বারবার আছরে পড়ছে। তারা তাদের শেষ সম্বল টিনের চালা ও অন্যান্য আসবার সরিয়ে নিচ্ছে নিরাপদ স্থানে।

বাড়ির বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রচন্ড রোধের মধ্যে খেলা আকাশের নিচে অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে যমুনার দিকে। এছাড়া পাশেই একটি পাকা মুদিখানা দোকানের গ্রিল, সাটার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। মালামাল ভ্যানে তোলা হচ্ছে। এদিকে দানবীয় যমুনার রাক্ষুসী থাবার কাছে হার মেনে নিজ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে খোলা ওয়াবদাবাঁধে অথবা পরের বাড়িতে উটুলী থাকতে। এ বিভিষীকাময় পরিস্থিতিতে কান্নার রোলে যমুনা পাড়ের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে, প্রতিদিনই দুরদুরান্তের শত শত মানুষ আসছে অসহায় ক্ষতিগ্রস্থদের দেখতে। কিন্তু জনপ্রতিনিধি অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাকে দেখা যাচ্ছে না নদী তীর রক্ষায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণে।

&dquote;&dquote;

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ জাকারিয়া হোসেন, তাহিরুল ইসলাম ও ছামাদ সরকার বলেন, যমুনা নদীর এতো ভয়ংকার গর্জন বিগত দিনে দেখা যায়নি। প্রচন্ড স্রোতে নদীর পানি তীরে এসে ঘূর্ণায়মান হয়ে চোখের পলকেই দেবে যাচ্ছে বিশাল বিশাল এলাকা। এসময় ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতেও বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকের পাকা দালান ঘরের ইট লোহা নদীর পেটে চলে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, এত ভয়াবহ নদী ভাঙনের খবর জানানো হলেও জনপ্রতিনিধি কিংবা পাউবো’র কোন কর্মকর্তা এ এলাকায় আসেনা। শুধু সাংবাদিকরা এসে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

তাদের প্রশ্ন, কাপড়ের হাট, তাঁতশিল্প কারখানা, মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ এই বিশাল এলাকা রক্ষায় সরকার কোন উদ্যোগ আসলে নিবে কি? নাকি নিজ দেশে থেকে আমরা কোন নাগরিক সুবিধা পাব না।

&dquote;&dquote;

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহবার আলী বলেন, নদী ভাঙনের ভয়াবহতা এতো বেশি যে প্রতিদিনই কোন না কোন বাড়ি অথবা স্থাপনা নদীতে চলে যাচ্ছে। এই বিষয়ে উর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েও কোন ফল না পেয়ে আমরা হতাশ।

তিনি আরো বলেন, আর্শ্চযের বিষয় হলো বিশাল একটি এলাকা নদীতে চলে যাচ্ছে অথচ কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না। এভাবে ভাঙতে থাকলে এনায়েতপুর এলাকার হাজার হাজার মানুষকে পথে বসতে হবে। দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সেখানে জিও ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের প্রস্তুতি চলছে। এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। সেই সাথে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প আসলে স্থায়ী সমাধান করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: