পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৮, ০৯:০৩ এএম

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও বাজিতপুরে পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে জোনাকী (৯), চাঁদনী (৭) ও সাফায়েত উল্লাহ (৪) নামে তিন সহোদরসহ মোট পাঁচ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৩ জুন) দুপুরের প্রায় একই সময়ে করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের উত্তর আশতকা গ্রামে এবং বাজিতপুর উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে মর্মান্তিক এই ঘটনা দু’টি ঘটে।

তবে সবার অগোচরে ডোবার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়ার পর তিন সহোদর জোনাকী, চাঁদনী ও সাফায়েত উল্লাহর লাশ রোববার (২৪ জুন) ভোর ৬টার দিকে ভেসে ওঠে।

অন্যদিকে শনিবার দুপুরেই বাজিতপুরের কামালপুরের গ্রামের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় দুই শিশু প্রিয়ামণি (৪) ও রিফাতুল ইসলাম (৫) কে উদ্ধারের পর বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত এই দুই শিশুর মধ্যে প্রিয়ামণি কামালপুর গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে এবং রিফাতুল ইসলাম একই গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শনিবার (২৩ জুন) দুপুরে সবার অগোচরে ডোবার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়ার পর রোববার (২৪ জুন) ভোর ৬টার দিকে তিন সহোদর জোনাকী, চাঁদনী ও সাফায়েত উল্লাহর লাশ ভেসে ওঠে। খবর পেয়ে স্বজনেরা লাশ উদ্ধার করেন। উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের উত্তর আশতকা গ্রামের পরশ আলীর বাড়ি সংলগ্ন ডোবা থেকে এই তিন সহোদরের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরশ আলী নিহত তিন সহোদরের খালু।

নিহত তিন শিশু একই উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া গাংপাড়ার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের সন্তান। তাদের মধ্যে জোনাকী দ্বিতীয় শ্রেণি এবং চাঁদনী প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।

পারিবারিক সূত্র জানায়, হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী জোৎস্না আক্তার শিশু সন্তানদের সাথে নিয়ে দুই দিন আগে তার বড় বোন আছমা আক্তারের উত্তর আশতকা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। বড় খালার বাড়িতে বেড়ানোর সময় খেলা করতে গিয়ে শনিবার দুপুরের দিকে তিন ভাই-বোন জোনাকী, চাঁদনী ও সাফায়েত উল্লাহ সবার অগোচরে ডোবার পানিতে পড়ে গিয়ে তলিয়ে যায়। 

তাদের কোন খোঁজ না পেয়ে তিন শিশু পানিতে পড়ে থাকতে পারে, এ ধারণা থেকে স্বজনেরা দুপুর থেকেই আশপাশের পুকুর, বাড়ি সংলগ্ন বর্ষার পানি ও নদীতে জাল ফেলে তাদের খোঁজে তৎপরতা চালান। তাদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মাইকিংও করানো হয়। কিন্তু এই তিন শিশুর কোন খোঁজ মিলেনি।

রোববার ভোর ৬টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের লাশ ভেসে উঠলে স্বজনেরা উদ্ধার করেন। তিন ভাই-বোনের মর্মান্তিক এই মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরশ আলীর বাড়িতে শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। কান্না আর আহাজারিতে ভেঙ্গে পড়েন স্বজনেরা। বাবা হেলাল উদ্দিন, মা জোৎস্না আক্তারসহ স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।

খবর পেয়ে গুনধর ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল সাকির নূরু সিকদার এবং দেহুন্দা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সঞ্জু ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন শিশুর লাশ দাফনের জন্য ভাটিয়া গাংপাড়া গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। পরে ভাটিয়া গাংপাড়া গ্রামের বাড়িতে তাদের লাশ দাফন করা হয়।

অন্যদিকে বাজিতপুরের কামালপুর গ্রামের বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে শনিবার দুপুরে দুই শিশু প্রিয়ামণি ও রিফাতুল ইসলাম পুকুরের পানিতে পড়ে গিয়ে ডুবে যায়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পুকুরে দুই শিশুকে ভাসতে দেখে। পরে তাদের উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।


বিডি২৪লাইভ/এমআরএম

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: