প্রধান শিক্ষকের যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী! অতঃপর...  

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০১৮, ১১:২৬ এএম

একজন শিক্ষার্থীর ভালো মানুষ হয়ে ওঠার পেছনে পিতা-মাতার চেয়ে শিক্ষকদের অবদান কম নয়। শিক্ষকদের সোনার মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়ে থাকে। যে জাতি যত শিক্ষিত, সেই জাতি তত উন্নত। আর শিক্ষকরা জাতির প্রধান চালিকাশক্তি। 

এক কথায় বলা যায়, শিক্ষক মানুষ গড়ে তোলেন। যার মধ্য দিয়ে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটিয়ে নীতি-নৈতিকতা ও জীবনাদর্শের বলয়ে একজন শিক্ষার্থী তার ব্যক্তিগত ও কর্মময় জীবনকে মুখরিত করে। 

কিন্তু সেই শিক্ষকের দ্বারা যদি ছাত্রী যৌন হয়রানি শিকার হন, তাহলে জাতি মুখ লুকাবে কোথায়? সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। সত্যিই এটা লজ্জ্বাজনক।    

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে শিক্ষকের যৌন হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে অবশেষ স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এক স্কুলছাত্রী। 

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ও তার মা।

যৌন হয়রানি শিকার ওই ছাত্রীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিশ্বাস বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: লুৎফর রহমান বেশ কিছু দিন ধরে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। চলতি মাসের ৪ জুলাই ওই শিক্ষক ছাত্রীর শরীরে হাত দিয়ে তাকে যৌন নির্যাতন করে। এই ঘটনাটি তার সহপাঠীরা জেনে যাওয়ায় সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় মেয়েটির পরিবারও লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। পরে বুধবার (১১ জুলাই) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সামছুল আলম তার কার্যালয়ে নির্যাতিতা ছাত্রী ও অভিযুক্ত শিক্ষক উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি সম্পন্ন করেন বলে জানা গেছে।

চাঞ্চল্যকর এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সামছুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।

ওই ছাত্রীর মা জানান, প্রধান শিক্ষক মো: লুৎফর রহমান স্কুল চলাকালীন ও প্রাইভেট পড়ানোর সময় অনেক দিন তার মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। ওই শিক্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় নিজের মেয়ের ওপর এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) শুনানির দিন এলাকার প্রায় অর্ধশত মাতুব্বর ও নেতাকর্মী নিয়ে ওই শিক্ষক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজিরা দিয়েছেন। ওই ছাত্রী ও তার মায়ের করা অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন ওই শিক্ষক। এমনকি নির্যাতিত ছাত্রীর চাচাকে ওই প্রধান শিক্ষক তার দলে নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার জানান, এই অভিযোগের তদন্ত করছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের সর্বোচ্চ সাজা হবে বলে জানান তিনি।

তবে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, স্কুলে অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে কোনো ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করা সম্ভব নয়। স্থানীয় একটি চক্র ষড়যন্ত্র মূলকভাবে আমার পিছনে উঠে পরে লেগেছে। ওই ছাত্রীকে তারাই উস্কানি দিয়ে আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় ওই চক্রটি।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: